ডেঙ্গু কেড়ে নিল স্বামীর প্রাণ, ২ মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় স্ত্রী
বরগুনা প্রতিনিধি:
‘হে ঈশ্বর এ কী তোমার বিধান, আমার স্বামীকে তুমি অকালে নিয়ে গেলা। তুমি ওদের (মেয়ে দুটিকে) সাগরে ভাসাইয়া দিলা। এখন আমি একা মেয়ে দুইটিকে কিভাবে মানুষ করব। ওদের কিভাবে পড়ালেখা করাব।
কিভাবে মানুষ করব’—অঞ্জন বনিকের সহধর্মিণী মিঠু বনিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলছিলেন।
বরগুনার বেতাগীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অঞ্জন বনিক (৪২) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা শরমিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অঞ্জন বনিক বেতাগী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হরিপদ বনিকের জ্যেষ্ঠ ছেলে এবং পৌর শহরে মুদি মনিহারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
পরিবার সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে অঞ্জন বনিক জ্বরে আক্রান্ত হন। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে প্রাথমিক চিকিৎসা নিলেও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। পরে পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা শরমিতা হাসপাতালে গত বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তিনি মারা যান।
তার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অঞ্জন ও মিঠু দম্পতির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মিথিলা বনিক (১০) ও অধরা বনিক (৪) নামে দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
মিথিলা ও অধরা দুপুরে বাবা অঞ্জন বনিকের মরদেহ নিয়ে এলে বারবার মূর্ছা যায় এবং কান্নায় ভেঙে পড়ে। অকালে এমন মৃত্যুতে পরিবারের স্বজন ও এলাকার মানুষের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বেতাগী শহরের ব্যবসায়ী মহলসহ পরিচিত সবার মাঝে নেমে আসে শোকের ছায়া।
বেতাগী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, ‘অঞ্জন বনিক বিভিন্ন পূজা-পার্বণ ও কীর্তন অনুষ্ঠানসহ সব সামাজিক কর্মে নিয়োজিত ছিলেন।’
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকালে (৬ সেপ্টেম্বর) পৌরসভার মহাশ্মশানে অঞ্জন বনিকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।