চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রামের এক মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও, নিহতের পরিবার এবং সুশীল সমাজের একটি অংশের দাবি, এটি কোনো সাধারণ আত্মহত্যা নয়, বরং এর পেছনে গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে।

ঘটনার আদ্যোপান্ত:

নিহত মহিলা, যিনি একটি পার্লারের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন, তার স্বামী একজন উচ্চ বেতনের মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। ২ লক্ষাধিক টাকা বেতনের অধিকারী স্বামীর থাকা সত্ত্বেও স্ত্রীর পার্লারে কাজ করা নিয়ে শুরু থেকেই নানা প্রশ্ন ছিল। ঘটনার পর থেকেই নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে স্বামীর প্রতি কোনো অভিযোগের কথা শোনা যায়নি, যা জনমনে আরও সংশয় তৈরি করেছে। এমনকি, পরিবারের দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, তারা নাকি স্বামীর পক্ষেই কথা বলছেন এবং তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

সন্দেহের আঙুল তৃতীয় ব্যক্তির দিকে?

সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের কর্মীদের মতে, এটি তৃতীয় কোনো ব্যক্তির ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাদের ধারণা, বিবাহ বহির্ভূত কোনো সম্পর্কের জের ধরে ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হয়ে থাকতে পারেন ওই মহিলা। এই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয় ময়নাতদন্তের কিছু তথ্যে। বলা হচ্ছে, মৃতদেহ ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেলেও পা মাটিতে লাগানো ছিল এবং জিহ্বা বের করা ছিল না – যা সাধারণত ফাঁসির ক্ষেত্রে দেখা যায় না।

পার্লারের মালিক ও চিরকুটের রহস্য:

নিহত মহিলা ছিলেন পার্লারের একমাত্র হিন্দু ম্যানেজার, যিনি অনেক মুসলিম কর্মচারীর মাঝেও বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এমন একজন আত্মবিশ্বাসী মহিলার হঠাৎ মৃত্যু, এবং কথিত চিরকুট পাওয়া যাওয়া – সব মিলিয়ে ঘটনাটি আরও ধোঁয়াশাচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, সত্যিই কি চিরকুটটি নিহতের হাতের লেখা? যদি স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হতো, তবে তিনি হয়তো নিজের বাড়িতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতেন, পার্লারে নয়।

পুলিশের তদন্তের প্রতি আস্থা:

এই পুরো ঘটনায় তৃতীয় কোনো ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে। পরকীয়ার জেরে ব্ল্যাকমেলিংয়ের শিকার হয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে কিনা, তা নিয়েও জল্পনা-কল্পনা চলছে। সংশ্লিষ্ট মহল এবং সাধারণ মানুষ আশা করছেন, পুলিশ প্রশাসন দ্রুত এই রহস্যের জট খুলবে এবং প্রকৃত সত্য উন্মোচন করবে।

জনমনে এখন একটাই প্রশ্ন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রীর এই রহস্যজনক মৃত্যুর পেছনে আসলে কী রহস্য লুকিয়ে আছে? পুলিশি তদন্তের দিকেই এখন সকলের দৃষ্টি নিবদ্ধ।