
সিরাজগঞ্জে ধর্মান্তরিত মুকুলের রহস্যজনক মৃত্যু, মরদেহ উদ্ধার!
HindusNews | সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের পূর্ব পাইকড়া গ্রামে রহস্যজনকভাবে এক নও মুসলিম ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম মুকুল (৬০), যিনি প্রায় বিশ বছর আগে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে— মুকুল বাড়ির পাশের একটি কাঁঠালগাছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে এলাকার অনেকেই এ দাবি মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, মুকুলকে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চলছে।
মুকুলের ছেলে আলমগীর হোসেন সকালে প্রতিবেশীদের জানান, রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়ার পর ভোর রাতে তার বাবা কাঁঠালগাছে রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে গাছের নিচে মুকুলের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। স্থানীয়দের সন্দেহ, ঘটনার পেছনে অন্য কোনো রহস্য থাকতে পারে।
এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা দ্রুতই দেখা যায়। রায়গঞ্জ থানা পুলিশ দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পাশাপাশি সন্দেহভাজন হিসেবে মুকুলের স্ত্রী গোলকজান ও ছেলে আলমগীর হোসেন-কে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।
রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম মাসুদ রানা HindusNews-কে জানান—
“বৃদ্ধ মুকুলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও, তদন্তের স্বার্থে তার স্ত্রী ও ছেলেকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
এলাকার অনেক বাসিন্দা বলেন, পারিবারিক কলহ ও দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব-সংঘাত মুকুলের অকাল মৃত্যুর পেছনে দায়ী হতে পারে। স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে HindusNews-কে জানান—
“এটা স্রেফ আত্মহত্যা নয়। আমরা মনে করি, বিষয়টির পেছনে গভীর রহস্য আছে। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
প্রসঙ্গত, নিহত মুকুলের বাড়ি ছিল উপজেলার ঘুড়কা গ্রামে। সেখান থেকে প্রায় ২০ বছর আগে তিনি সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং চান্দাইকোনা ইউনিয়নের মৃত আব্দুল গণির মেয়ে গোলকজানকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই তিনি পূর্ব পাইকড়া গ্রামে বসবাস শুরু করেন।
বর্তমানে মুকুলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে সন্দেহ করছে, আবার কেউ কেউ পরিবারের দাবিকেই সত্যি মনে করছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না।