
শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্নে ২৫ দফা নির্দেশনা দিলো বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
ঢাকা প্রতিনিধি, HindusNews :
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সারা দেশে শান্তিপূর্ণ, সুন্দর ও নিরাপদভাবে উদযাপন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ২৫ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। সংগঠনটি দেশের সব জেলা ও উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটিকে এই নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিটি মণ্ডপে পূজার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে ভক্তরা নির্বিঘ্নে পূজা-অর্চনা করতে পারেন।
নির্দেশনার মূল বিষয়গুলো
১. মহাশক্তির আরাধনা শাস্ত্রসম্মতভাবে এবং সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে করতে হবে।
২. ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৩. প্রতিটি মণ্ডপে পূজা শুরুর আগেই স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. স্থানীয় মন্দিরের বাইরে অস্থায়ী মণ্ডপে প্রতিটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথে দর্শনার্থীদের চলাচল সহজ করতে হবে।
৫. নারী-পুরুষের জন্য আলাদা শৃঙ্খলা বজায় রেখে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের তালিকা জেলা প্রশাসনকে দিতে হবে।
৬. সন্দেহজনক দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা তদারকির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৭. উচ্চ শব্দের মাইক, পিএস বা অতিরিক্ত লাউডস্পিকার ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে; স্থানীয় সংস্কৃতির বাইরে কোনো গানের ব্যবহার করা যাবে না।
৮. প্রতিটি মণ্ডপে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক ও পাহারা ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯. মণ্ডপের চারপাশে অযথা আড্ডা বা অসংলগ্ন ব্যক্তিদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
১০. মণ্ডপে ও তার বাইরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তা নিতে হবে।
১১. অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (Fire Extinguisher) ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে; কোনো জরুরি ঘটনা হলে ‘৯৯৯’-এ যোগাযোগ করতে হবে।
১২. মণ্ডপ/মন্দিরে নির্দিষ্ট Focal Point নির্বাচন করে দায়িত্ব বণ্টন করতে হবে।
১৩. কোনো প্রকার গুজব ছড়িয়ে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
১৪. বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৫. স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে যেকোনো ঘটনা দ্রুত জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
১৬. দেশি-বিদেশি অসংলগ্ন ব্যক্তিরা যেন মণ্ডপে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য কড়া নজরদারি করতে হবে।
১৭. বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১৮. ইট-পাথর বা কাঁটাতারের মতো বিপজ্জনক বস্তু মণ্ডপের আশপাশে রাখা যাবে না।
১৯. পূজার সময় কোনোভাবে বিক্ষোভ বা শোভাযাত্রা করলে যেন শান্তি নষ্ট না হয়, সেজন্য কড়া নজরদারি করতে হবে।
২০. পূজারাজ্য ও প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় পর্যন্ত সব মণ্ডপে রেজিস্টার খুলে রাখতে হবে যাতে ঘটনাবলী লিপিবদ্ধ থাকে।
২১. মণ্ডপে সর্বক্ষণ ২৪ ঘণ্টা পাহারা রাখতে হবে।
২২. স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকা ও ফোন নম্বর সংশ্লিষ্ট থানায় ও প্রশাসনের কাছে দিতে হবে।
২৩. স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের সরাসরি যোগাযোগ রাখতে হবে।
২৪. নিরাপত্তার স্বার্থে সব স্বেচ্ছাসেবকদের নাম-ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও পরিচয়পত্র রাখতে হবে।
২৫. স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ ও পর্যাপ্ত নির্দেশনা রাখতে হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, ২৫ দফা নির্দেশনা অনুসরণ করলে দুর্গাপূজার সময় আইনশৃঙ্খলা ও শৃঙ্খলাবিধি বজায় থাকবে এবং ভক্তরা নির্বিঘ্নে ধর্মীয় আচার পালন করতে পারবেন।