
নেপালের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি।
নিজস্ব প্রতিবেদক, HindusNews:
নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার অবসান ঘটাতে অবশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা এসেছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী, রাষ্ট্রপতির দপ্তর এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান সংকট নিরসন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে আনা হয়েছে।
সুশীলা কার্কি নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। দুর্নীতি দমন ও ন্যায়বিচারের স্বচ্ছতার জন্য তিনি সুপরিচিত। সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার ইস্যুতে তার সক্রিয় ভূমিকা এবং ব্যক্তিগত সততা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি আস্থার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সাম্প্রতিক ‘জেন-জি’ আন্দোলনের সময় বিক্ষোভকারীরা কার্কির নাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে প্রস্তাব করেছিল এবং অবশেষে সেই প্রস্তাব বাস্তবে রূপ পেল।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর সুশীলা কার্কি প্রথম বিবৃতিতে বলেন, “আমি পক্ষপাতহীনভাবে দেশের চলমান সংকট মোকাবিলা করব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে সবার সরকার। আমাদের মূল কাজ হবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া এবং দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, সব পক্ষের সহযোগিতায় নেপাল একটি স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে যাবে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর কেপি শর্মা অলি জেন-জির বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। তার পদত্যাগের পর দেশজুড়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সেই অনিশ্চয়তা কাটাতেই সেনাবাহিনী, রাষ্ট্রপতি, প্রধান রাজনৈতিক দল ও বিক্ষোভকারীদের সমন্বয়ে গঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে একটি জরুরি সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে কার্কির নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি সংকটকালীন সময়ে আস্থা জাগাতে পারবে এবং ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন ও প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি দেশের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন।