
ধানের প্রতিমার পর এবার পাটের প্রতিমা: শরীয়তপুর-সাতক্ষীরায় ব্যতিক্রমী দুর্গোৎসব
নিজস্ব প্রতিবেদক,HindusNews :
শারদীয় দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা নির্মাণে আসছে নতুনত্ব। চিরাচরিত মাটি আর রঙ-তুলির কাজ বাদ দিয়ে এবার শরীয়তপুরে ধান আর সাতক্ষীরায় পাট দিয়ে তৈরি হচ্ছে দুর্গা প্রতিমা।
শরীয়তপুরের ঘোষপাড়া মন্দিরে ধানের প্রতিমা
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া ‘শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ধাম দুর্গা মন্দিরে’ তৈরি হচ্ছে আট ফুট উচ্চতার সোনালি ধানের প্রতিমা। পূজা সামনে রেখে দিনরাত এক করে সেখানে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। সূক্ষ্মভাবে ধাপে ধাপে এক একটি করে বসানো হচ্ছে সোনালি ধান, যা এরই মধ্যে ভক্ত-দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে।
প্রধান প্রতিমা শিল্পী রাজিব সরদার বলেন, “আমরা সব সময় মাটি আর রঙ তুলির আচরে প্রতিমা বানালেও এ বছর বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে ধান দিয়ে প্রতিমা বানাচ্ছি। যা এই অঞ্চলে এর আগে কেউ বানায়নি।”
মন্দির কমিটির সভাপতি গোপাল ঘোষ জানান, “আমরা সবসময় আমাদের মন্দিরে ব্যতিক্রমী কিছু করার চেষ্টা করি। এ বছর ধানের প্রতিমা নির্মাণ করা হচ্ছে, যা এর আগে ফরিদপুর অঞ্চলে বানানো হয়নি। আমরা আশা করছি, এ বছর ধানের প্রতিমা দেখতে লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম ঘটবে।”
মন্দির কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, আট ফুট উচ্চতার এই প্রতিমাটি গড়তে ধান লাগবে প্রায় এক মণ। গত আড়াই মাস ধরে প্রতিমার মূল কাজ চলছে; বর্তমানে গায়ে ধান বসানোর কাজ শেষ পর্যায়ে।
সাতক্ষীরায় পাটের প্রতিমা
শরীয়তপুরের ধানের প্রতিমার পর এবার সাতক্ষীরার একটি মন্দিরে পাট দিয়ে তৈরি হচ্ছে দুর্গা প্রতিমা। প্রতিমা শিল্পীরা বলছেন, স্থানীয় কৃষিপণ্য ব্যবহার করে ব্যতিক্রমী প্রতিমা বানানোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে ভক্তদের মধ্যে নতুনত্ব আনা এবং স্থানীয় কৃষির প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করা।
প্রতিমা শিল্পীদের মতে, পাট দিয়ে প্রতিমা তৈরি করা যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি সূক্ষ্ম কাজেরও প্রয়োজন হয়। ধান বা পাট – দুই মাধ্যমেই প্রতিটি অংশে আলাদা করে হাতের কাজ করতে হয়।
ব্যতিক্রমী আয়োজনের ভিড়ে জমজমাট দুর্গোৎসব
দেশের যে কয়েকটি জেলায় জমজমাট দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়, তার মধ্যে শরীয়তপুর অন্যতম। এ বছর জেলায় ১০১টি মন্দির ও মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে মণ্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জায়, পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আয়োজনের প্রস্তুতিও চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ধরনের প্রতিমা দর্শনার্থীদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করবে। আর আয়োজকরা আশা করছেন, ধান ও পাটের প্রতিমা এ বছর সারা দেশে বিশেষ আকর্ষণ হয়ে উঠবে।