
ফেনীতে পূজা মণ্ডপের সংখ্যা বেড়ে ১৫০,চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত আয়োজকরা।
ফেনী প্রতিবেদক, HindusNews :
ফেনীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এ বছর জেলার ১৫০টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। গত বছর ফেনীতে ১৪৭টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০টিতে দাঁড়িয়েছে। প্রতিমা তৈরির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে, চলছে মণ্ডপের সাজসজ্জা ও নির্মাণকাজ। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম—সবখানেই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিশেষত ফেনী শহরের শ্রী শ্রী গুরুচক্র মন্দিরে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। কারিগর সুশীল পাল জানান, তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন এবং এ বছরও সুন্দর ও নিখুঁত প্রতিমা তৈরির চেষ্টা করছেন।
মণ্ডপের আয়োজকরা জানান, এবারের দুর্গোৎসবে মা দুর্গা হাতিতে চড়ে আসবেন এবং দোলায় করে গমন করবেন। পূজামণ্ডপগুলোতে যেন কোনো প্রকার নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকে—সেজন্য জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা কামনা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, এ বছর ফেনীর কোনো পূজামণ্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ এবার নিরাপত্তায় থাকছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা সচল রাখা, পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং টহল জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ফেনী পুলিশ সুপার বলেন, নাশকতা ঠেকাতে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। দুর্গোৎসবের পূর্বেই গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। মন্দির কমিটিগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা জায়গা-সংক্রান্ত বিরোধ দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে, না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হীরালাল চক্রবর্তী বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আনন্দ-উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। ফেনী শহরতলির বারাহীপুর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি তপন কুমার কর বলেন, তাদের প্রত্যাশা, এবারের দুর্গাপূজা অত্যন্ত সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হবে।
হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুক দেবনাথ তপন বলেন, সকল ধর্মের জনগণ যেন এই দুর্গোৎসব শান্তি ও সম্প্রীতির মাধ্যমে পালন করতে সাহায্য করেন। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী জানান, পূজাকে ঘিরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এবারের দুর্গাপূজা সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
সব মিলিয়ে ফেনীর ১৫০টি পূজা মণ্ডপে এবারের দুর্গোৎসব যেন আনন্দঘন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হয়—এটাই সবার প্রত্যাশা।