
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোলানাথ ধাম সংক্রান্ত উস্কানিমূলক পোস্ট, তদন্তে মেলেনি কোনো সত্যতা
তন্ময় মালাকার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভোলানাথ ধাম মন্দিরকে ঘিরে প্রচারিত উস্কানিমূলক পোস্ট নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ‘Abul Kalam Azad voice’ নামের একটি আইডি থেকে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বানীগ্রামে অবস্থিত ইসকন পরিচালিত ‘ভোলানাথ ধাম মন্দির’ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ করা হয়।
উক্ত পোস্টে দাবি করা হয় যে, মন্দির কর্তৃপক্ষ নাকি স্থানীয় মসজিদ, মাদ্রাসা ও মুসলিমদের জমি দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করেছে—যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পরবর্তীতে ওই পোস্টটি বিভিন্ন আইডি থেকে শেয়ার ও পাল্টা মন্তব্যের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরির আশঙ্কা দেখা দেয়।
পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ
ঘটনাটি জেলা পুলিশের নজরে আসার সাথে সাথে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারের নির্দেশে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে ভোলানাথ ধাম মন্দির ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন।
সরেজমিন তদন্তে যা পাওয়া গেছে ভোলানাথ ধাম মন্দিরটি বনবিভাগের জমিতে অবস্থিত এবং এর পাশে একটি মসজিদ রয়েছে।বহু বছর ধরে দুই ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বসবাস করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্যের সঙ্গে ঘটনাস্থলের বাস্তব পরিস্থিতির কোনো মিল পাওয়া যায়নি। এলাকায় বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তায় জানানো হয়েছে,
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ জোর দিয়ে জানিয়েছে, ভোলানাথ ধাম সংক্রান্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত উস্কানিমূলক তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও গুজব। সবাইকে বিভ্রান্তিকর এ ধরনের পোস্ট থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পুলিশ সুপার চট্টগ্রাম জেলা জনাব মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বিপিএম-বার বলেন,
“আমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই যে, ভোলানাথ ধাম ও এর সংলগ্ন এলাকায় মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। গুজব বা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে কোনো অপচেষ্টা কঠোর হাতে দমন করা হবে।”
জেলা পুলিশের করণীয় পরামর্শ
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে—
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো তথ্য শেয়ার বা প্রচারের আগে তার সত্যতা যাচাই করতে।বিভ্রান্তিকর পোস্ট থেকে বিরত থাকতে।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখতে ও জমি বা অন্য কোনো বিষয়ে কারও দাবি থাকলে তা আলোচনা করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বদা জনগণের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।