
যশোরে দুই স্বামীর টানাটানিতে সীমা অধিকারী, থানায় চাঞ্চল্য!
নিজস্ব প্রতিবেদক | HindusNews
ভারতের টেলিভিশন নাটক বা সিনেমার গল্প যেন হুবহু নেমে এসেছে যশোরে। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যশোর কোতোয়ালি থানার চত্বরে এক নারীকে নিয়ে দুই স্বামীর প্রকাশ্য টানাটানির ঘটনায় উপস্থিত জনতা হতবাক হয়ে পড়েন। এই অস্বাভাবিক দৃশ্য দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকার বিকাশ অধিকারীর সঙ্গে সীমা অধিকারীর প্রায় ছত্রিশ বছরের সংসার। এ দাম্পত্য জীবনে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সীমা ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কয়েকদিন আগে তিনি বিকাশের ঘর ছেড়ে পলাশের হাত ধরে ভারতে গিয়ে বিয়ে করেন। সোমবার রাতে সীমা ও পলাশ যশোরে এসে একটি হোটেলে ওঠেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে প্রথম স্বামী বিকাশ সেখানে উপস্থিত হন। বিষয়টি পরে গড়ায় কোতোয়ালি থানায়, যেখানে তিনজনের মধ্যে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে হয় পুলিশকে।
দ্বিতীয় স্বামী পলাশ কুন্ডু জানান, সীমার সঙ্গে তার তিন বছরের সম্পর্ক রয়েছে এবং দুজনেই স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন। তিনি বলেন, এখন তারা একসঙ্গে থাকতে চান, কিন্তু বিকাশ তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। অন্যদিকে সীমা অধিকারী অভিযোগ করেন, তিনি বিকাশের সংসারে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, আর এসব সহ্য করতে না পেরে পলাশকে বিয়ে করেছেন। তাই আর বিকাশের সঙ্গে সংসার করবেন না।
প্রথম স্বামী বিকাশ অধিকারী অবশ্য অন্য দাবি তুলেছেন। তার ভাষ্য, সীমার পরকীয়ার কারণে তার সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। শুধু ঘরই ছাড়েননি, নগদ টাকা ও গয়নাও নিয়ে গেছেন সীমা। তিনি যেকোনো মূল্যে সীমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চান।
কোতোয়ালি থানার ওসি-তদন্ত কাজী বাবুল বলেন, ৯৯৯–এ কল পাওয়ার পর পুলিশ যশোরের একটি হোটেল থেকে সীমা, বিকাশ ও পলাশ—এই তিনজনকে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনগত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় হওয়ায় বিষয়টি আইনের মাধ্যমে সমাধানের পথেই নেওয়া হচ্ছে।
ঘটনাটি যশোর শহরে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, পারিবারিক বিরোধের এমন নাটকীয় পরিণতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পৌঁছানো বিরল ঘটনা হলেও মঙ্গলবারের দৃশ্য যেন কোনো নাটকের চিত্রকেও হার মানিয়েছে।