


ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে আদিবাসী বিক্ষোভ, সেনা গুলিতে আহত অনেক! খাগড়াছড়িতে চরম উত্তেজনা!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় এক আদিবাসী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে কয়েকদিন ধরে অবরোধ ও বিক্ষোভ চলছে। “জুম্ম ছাত্র-জনতা” ব্যানারে আয়োজিত এই আন্দোলন রবিবারও থামেনি। সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। গুইমারা টাউন হল এবং রামেসু বাজার এলাকায় আন্দোলনকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
বেলা ১২টার দিকে রামেসু বাজারে অবরোধ চলাকালে সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ উঠেছে, সেনারা অবরোধকারীদের ওপর গুলি চালায়। এতে অন্তত দশজন আদিবাসী আহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একই সময়ে সেটলার বাঙালি সম্প্রদায়ের কিছু লোক পাহাড়িদের দোকানপাটে হামলা চালায় ও অগ্নিসংযোগ করে বেশ কিছু দোকানপাট পুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার খেজুরবাগান, মহাজনপাড়া ও পানখাইয়া পাড়া এলাকাতেও সেটলার বাঙালিদের হামলার ঘটনা ঘটে। রবিবার সকালের পর থেকে রামগড় এলাকায়ও জুম্ম ছাত্র-জনতা খাগড়াছড়ি–ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে অবরোধ শুরু করে। বিজিবি সদস্যরা সড়কে ফেলা গাছের গুঁড়ি পরিষ্কার করতে গেলে তাদের সঙ্গে অবরোধকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করে, যদিও অবরোধ চলতে থাকে এবং যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারীরা ধর্ষণের ঘটনার পূর্ণ তদন্ত ও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন। একই সঙ্গে তারা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন। স্থানীয় জনপদে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে, দোকানপাট আংশিক বন্ধ রয়েছে এবং সাধারণ মানুষ বাড়িঘরে অবস্থান করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চলছে।
এই ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, নিরপেক্ষ তদন্ত ছাড়া পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধান না হলে দীর্ঘদিনের সহাবস্থানের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে।