
দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ডাকসু নেতাদের সাক্ষাৎ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারা দেশে পূজামণ্ডপগুলোতে সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নেতৃবৃন্দ আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা পূজার নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করেন।
সাক্ষাৎ শেষে ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েম ও সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদ সাংবাদিকদের সামনে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে জানান, দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপস্থিতি জোরদার, গোয়েন্দা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ এবং ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি কিছু এলাকায় পূজামণ্ডপ ভাঙচুরের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন তারা।
ডাকসু নেতারা পূর্ববর্তী প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাদের মতে, দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা গেলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে এবং পূজার পরিবেশ আরও নিরাপদ হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডাকসু প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করে বলেন, দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আজও একটি সভা রয়েছে। তিনি সর্বাত্মক আন্তরিকতার সঙ্গে পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন।
এস এম ফরহাদ জানান, গতকাল ডাকসু প্রতিনিধিরা জগন্নাথ হলের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন এবং হল সংসদ, শিক্ষক ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ শিব মন্দির ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিনিধিরা ডাকসুর কাছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ তুলে ধরেন, যা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে তোফাজ্জল ও সাম্য হত্যাকাণ্ড দুটি গুরুতর ঘটনা। তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলেও বিচার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি, আর সাম্য হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদনও এখনো প্রকাশিত হয়নি। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আশ্বাস দিয়েছেন, শিগগিরই এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হবে।
ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য দেশ। জুলাই বিপ্লবের পর বিশ্বদরবারে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষকে দায়িত্বশীল আচরণের মাধ্যমে এই সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
সাক্ষাৎকালে ডাকসুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা এবং কার্যনির্বাহী সদস্য সর্ব মিত্র চাকমা উপস্থিত ছিলেন।