
আজ নবদুর্গার সপ্তম রূপে দেবী কালরাত্রির পূজা
HindusNews ডেস্ক :
আজ মহালয়ার পর দুর্গোৎসবের সপ্তমী তিথি। হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই দিনটি নবদুর্গার সপ্তম রূপ দেবী কালরাত্রির আরাধনার দিন হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে দেবী কালরাত্রির পূজা করলে ভক্তদের জীবনের সব ধরনের ভয় ও অমঙ্গল দূর হয় এবং সমস্ত মঙ্গলকামনা পূর্ণ হয়। সেই কারণে তাঁকে শুভঙ্করী নামেও ডাকা হয়।
মা দুর্গার নয়টি রূপের মধ্যে কালরাত্রি সবচেয়ে উগ্র ও ভয়াল রূপ। পুরাণে তাঁকে পার্বতীর রৌদ্ররূপ বলা হয়েছে। ব্যাঘ্রচর্ম পরিহিতা এই দেবীর বর্ণ ঘন অন্ধকারের মতো কালো, এলোকেশী, গলায় বিদ্যুৎসম দীপ্তিময় মালা। ত্রিনয়নী দেবীর চোখ থেকে নিঃসৃত হয় বিদ্যুতের মতো আলো আর নাসিকা থেকে নির্গত হয় ভয়ঙ্কর অগ্নিশিখা। তাঁর হাতে থাকে বজ্র, খড়গ, বরমুদ্রা ও অভয়মুদ্রা। গর্দভ বা গাধা তাঁর বাহন। অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর বৈশিষ্ট্য।
পুরাণে বলা আছে, রাক্ষসকুলধিপতি রুরুর অত্যাচার দমন ও দেবতাদের রক্ষা করতে দেবী দুর্গা কালরাত্রির রূপ ধারণ করেছিলেন। আবার দেবী মাহাত্ম্যে চণ্ড ও মুণ্ড অসুরবধের ঘটনাও উল্লেখিত আছে—যুদ্ধক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর হুঙ্কার দিয়ে প্রবেশ করে দেবী কালিকা (কালরাত্রি) এক কোপে চণ্ড ও মুণ্ডের শিরোচ্ছেদ করেন। এই কৃতিত্বের জন্যই তিনি ‘চামুণ্ডা’ নামে জগতে খ্যাত হন।
ঋগ্বেদের “রাত্রিসুক্ত”-এ পরমাত্মাকে রাত্রি বলা হয়েছে। মহাপ্রলয়ের রাত্রিই মহারাত্রি, আর মহারাত্রিরও গভীরতর রূপ কালরাত্রি। তিনি বিশ্বকে স্তব্ধ করেন, প্রলয়ে সকল জীবকে আশ্রয় দেন। তাই ভক্তদের কাছে তিনি বীরত্ব, সাহস ও নিঃশঙ্কতার প্রতীক।
ভক্তরা আজ বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপে দেবী কালরাত্রির আরাধনায় মাতেন। বিশেষ ধ্যানমন্ত্র ও প্রণামমন্ত্র পাঠ করা হয়। গুড় নিবেদন করলে দেবী প্রসন্ন হন বলে বিশ্বাস। ভক্তদের ধারণা, দেবীর কৃপায় জীবনের সমস্ত অমঙ্গল ও ভীতি দূর হয়।