
পূজার উৎসবের কারাবন্দি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস! ৩১৯ দিনের কারাবাসে নিস্তব্ধতা ও বেদনায় ভক্ত-অনুসারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
আজ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫। শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দে চারদিকে উৎসবের রঙিন ছটা ছড়িয়ে থাকলেও, এক ভিন্ন বাস্তবতায় দিন কাটছে ধর্মীয় নেতা ও সমাজসেবক চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের।
৩১৯ দিন ধরে কারাগারে বন্দি থাকা এই নেতার অনুপস্থিতিতে তার পরিবার, ভক্ত ও অনুসারীরা দুঃখ ও শূন্যতায় দিন পার করছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তিনি ‘বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ’-এর মুখপাত্র হিসেবে ২৫ অক্টোবর ২০২৪ চট্টগ্রামে একটি সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। ওই সমাবেশের পর বিএনপি নেতা ফিরোজ খান একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করেন, যেখানে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। তবে তার পরিবার ও অনুসারীদের দাবি, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা, মন্দির সুরক্ষা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে আসছেন। তার এই ভূমিকার কারণে বিরোধীদের ষড়যন্ত্রে তাকে ভুয়া মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে সমর্থকদের অভিযোগ।
তার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় সংগঠন, মানবাধিকার সংস্থা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে আসছেন।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে Voice for Justice-এর উদ্যোগে এক বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, “চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।”
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দীর্ঘ কারাবাস শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের কণ্ঠরোধের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। শারদীয় উৎসবের আনন্দের মাঝেও অনেকের মুখে হাসি নেই। হৃদয়ে বয়ে চলেছে গভীর বেদনা ও শূন্যতা।
সনাতনীরা বলছেন, ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃত্বের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করা কোনোভাবেই একটি গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য শুভ লক্ষণ নয়।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবি শুধু একটি ব্যক্তির মুক্তি নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের ন্যায়ের ও অধিকার রক্ষার দাবিও বটে।