
বান্দরবানে মহাসমারোহে শুরু হলো শারদীয় দুর্গাপূজা: ৩২ মণ্ডপে উৎসবের আমেজ
অর্পন কর্মকার,বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি :
দেবী দুর্গাকে উৎসর্গ করে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন ও দেবীর মুখন্মোচনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা মহাসমারোহে শুরু হয়েছে। জেলার মোট ৩২টি পূজা মণ্ডপে এখন উৎসবের আমেজ তুঙ্গে, ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রতিটি মণ্ডপ।
প্রতি বছরের মতো এবারও জেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বড় পূজা মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। বর্ণিল আলোকসজ্জা, শারদীয় সাজসজ্জা আর নানা রঙের ব্যানারে সেজেছে পুরো এলাকা। পাশাপাশি মাঠ জুড়ে বসেছে শারদ মেলা, যেখানে স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে মিলেমিশে চলছে নানা পণ্যের দোকান ও বিনোদনের আয়োজন।
গতকাল রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজার মাঠে কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে দেবী দুর্গার মুখন্মোচন করেন বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই। শুভ সূচনা অনুষ্ঠানে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর শুরু হয় ষষ্ঠী পূজা।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ শহীদুল্লাহ কাওছার, জেলা পরিষদের সদস্য আবুল কালাম আজাদ, মন্দির কমিটির সভাপতি নিখিল দাশ, কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রাজেশ্বর দাশ, সাধারণ সম্পাদক সবুজ দত্ত বাচ্চুসহ পূজা উদযাপন কমিটি, মন্দির কমিটি ও সনাতনী সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বাংলাদেশ হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের মাননীয় ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত লামা কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে উপস্থিত হয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভ উদ্বোধন করেন।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি মানবিক উদ্যোগও নেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে শতাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষাবৃত্তি এবং ৫ শতাধিক দুস্থ মানুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এই উদ্যোগ স্থানীয় সনাতনী সমাজের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং উৎসবের আনন্দকে আরও অর্থবহ করে তুলেছে।
বান্দরবানের পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের বিশেষ টিম মোতায়েন করা হয়েছে। এতে ভক্তরা নির্ভয়ে পূজা উপভোগ করতে পারছেন।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বান্দরবান শহরজুড়ে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। সকাল থেকে রাত অবধি ঢল নামছে ভক্ত-দর্শনার্থীর। জেলা সদরের মণ্ডপ ছাড়াও থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলায়ও একই উৎসাহ ও উদ্দীপনায় পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।