
কুড়িগ্রামে নিখোঁজ আপন দুই বোন: স্নিগ্ধা রানী ও পূর্ণীমা রানী, ১৩ দিন ধরে অজ্ঞাত, শোক-আতঙ্কে পরিবার
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের আপন দুই বোন স্নিগ্ধা রানী (২৪) ও পূর্ণীমা রানী (১৮) গত ১৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও এখনও পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় শুধু পরিবার নয়, স্থানীয় এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া।
জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হন ওই দুই বোন। তাদের বাবা শৈলেন্দ্র নাথ বর্মন, যিনি উমরমজিদ ইউনিয়নের একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজারহাট থানায় বিষয়টি জানিয়ে জিডি করেন। স্নিগ্ধা রানী কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং তার ছোট বোন পূর্ণীমা একই কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়াশোনায় মেধাবী ও শিষ্টাচারপূর্ণ এ দুই বোনের হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পরিবারকে গভীর দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত করেছে।
দুর্গাপূজার এই সময়ে যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোতে উৎসবের আনন্দ বিরাজ করছে, তখন বর্মন পরিবারে নেমে এসেছে অন্ধকার। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, দুই মেয়েকে ছাড়া তারা যেন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। শৈলেন্দ্র নাথ বর্মন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার দুই মেয়েকে ছাড়া আমরা অন্ধকারে ডুবে গেছি। তারা যেখানে থাকুক, ভগবান যেন তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনে। প্রশাসনের কাছে আমাদের আকুল অনুরোধ, দ্রুত আমাদের মেয়েদের উদ্ধার করা হোক।”
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে এবং নিখোঁজ দুই বোনের অবস্থান নির্ণয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তারা প্রশাসনের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এলাকাবাসীও এক সুরে বলছে, নিখোঁজ স্নিগ্ধা রানী ও পূর্ণীমাকে অক্ষত অবস্থায় দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক।
১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও দুই বোনের খোঁজ না মেলায় এখন কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বর্মন পরিবারে আনন্দের কোনো জায়গা নেই, আছে শুধু শোক, অস্থিরতা ও প্রার্থনা। এলাকার মানুষ এখন একটাই আশা করছেন—স্নিগ্ধা ও পূর্ণীমা যেন শিগগিরই নিরাপদে ফিরে আসে।