
ঠাকুরগাঁওয়ে ঘর থেকে হিন্দু মা-মেয়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
HindusNews ডেস্ক
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের সিকদারহাট এলাকায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় নিজ বাড়ি থেকে মা ও মেয়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার গভীর রাতে পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের জগদীশ বর্মণের স্ত্রী সর্মিলা রাণী বর্মণ এবং তার প্রতিবন্ধী মেয়ে শাপলা রাণী বর্মণ।
স্থানীয়রা জানায়, সর্মিলার স্বামী বহু বছর আগে আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস শুরু করেন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জীবনের নানা প্রতিকূলতার মধ্যে সর্মিলা তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করতেন। সংসার চালানোর জন্য তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন এবং বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। তাদের মৃত্যু কবে হয়েছে তা কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছে না।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে সোমবার দুপুরে, যখন এক এনজিও কর্মী কিস্তির টাকা আদায় করতে সর্মিলার বাড়িতে যান। তখন তিনি কাউকে না পেয়ে ফিরে আসেন। বিকেলে আবারও গেলে ঘর ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান এবং কারও কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়দের বিষয়টি জানান তিনি। এলাকার মানুষ ঘরের কাছে গিয়ে তীব্র দুর্গন্ধ টের পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে মা-মেয়ের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
ভূল্লী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। থানার উপ-পরিদর্শক দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, ঘরের দরজা ভেতর থেকে আটকানো ছিল এবং কোনো ভাঙচুরের আলামত পাওয়া যায়নি। এছাড়া দরজা বিদ্যুতায়িত অবস্থায় ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুতায়িত হয়ে মা-মেয়ে মারা গেছেন। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।
এলাকাবাসী জানায়, দুঃখ-কষ্টে ভরা এই পরিবারের হঠাৎ এমন করুণ পরিণতিতে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা সর্মিলাকে সংগ্রামী নারী হিসেবে বর্ণনা করেন, যিনি প্রতিকূলতার মধ্যেও মেয়েকে নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। তাদের অকাল মৃত্যু সবাইকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছে।