
নেই দুর্গোৎসবের আমেজ, ভেঙে গেল দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সাঘাটার ভরতখালী ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্র উল্যাবাজারে এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়নি। প্রতিবছরের মতো পূজার আমেজে ভরপুর থাকলেও এবার পুরো এলাকা নীরব নিস্তব্ধতায় ছেয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, পূজামণ্ডপের চাল খোলা অবস্থায় মন্দির ঘর নিথর হয়ে আছে। নেই কোনো প্রতিমা, নেই আয়োজন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রি অফিসের পাশে এই পূজা জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসত। পূজাকে ঘিরে বসত মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নানান সামাজিক আয়োজন হতো। শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নয়, অন্যান্য ধর্মের মানুষও সমান উৎসাহে অংশ নিত। ব্যবসায়ীদের জন্যও এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক উৎস। এবার পূজা না হওয়ায় এলাকায় হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে, উৎসবের আনন্দ হারিয়ে গেছে।
স্থানীয় তথ্য ও সূত্রে জানা গেছে, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নিজস্ব জায়গায় মন্দিরটিতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্গাপূজা উদযাপিত হতো। তবে এই সম্পত্তি সংক্রান্ত জমি বিরোধ, নিরাপত্তার প্রশ্ন এবং পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মতিতে এই বছর পূজা স্থগিত করা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থকেও দায়ী করেছেন।
ভরতখালী ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে উল্যাবাজারের পূজার পরিবর্তে অন্যত্র পূজার আশ্বাস দেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত অন্যত্রও পূজা হচ্ছে না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এতে উল্যাবাজারবাসীর মধ্যে কৌতূহল ও দুঃখের বেদনা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উল্যাবাজারের শারদীয় দুর্গোৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়; এটি ইউনিয়নজুড়ে মানুষের সামাজিক সম্প্রীতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল। তাই পূজা না হওয়ায় স্থানীয়দের হৃদয়ে এক শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।
২নং ভরতখালী ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, “উল্যাবাজারের দুর্গাপূজা একটি ঐতিহ্য। এ বছর পূজা না হওয়ায় মনে হচ্ছে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।”