
সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ক্ষোভ ঐক্য পরিষদের
HindusNews ডেস্ক :
জাতিসংঘ অধিবেশনের ফাঁকে গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সরকারের আমলে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে গভীর ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।
ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার এক লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার এ বক্তব্যের মাধ্যমে সত্যকে অস্বীকার করা হয়েছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দুঃসহ অভিজ্ঞতাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে।
বিবৃতিটি সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ স্বাক্ষর করেন। এতে উল্লেখ করা হয়—
> “গত বছর ১৩ আগস্ট যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছিলাম, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সংঘটিত সহিংসতা ও নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। অথচ আজ তিনি জাতিসংঘের মঞ্চে দাঁড়িয়ে উল্টো বক্তব্য দিলেন, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।”
ঐক্য পরিষদ আরও জানায়, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত জাতিসংঘ তথ্যানুসন্ধান কমিশনের রিপোর্টে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সময়কালে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘটিত সহিংসতার সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অথচ সরকার প্রধান উপদেষ্টা এখন সে বাস্তবতাকে অস্বীকার করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “এখনও দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আক্রান্ত হচ্ছে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার নানা রিপোর্টেই এসব সত্য তুলে ধরা হয়েছে। অথচ প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে সংখ্যালঘুদের দুর্দশাকে অস্বীকার করে নতুন করে হতাশার জন্ম দিলেন।”
উল্লেখ্য, গত বছর ১ অক্টোবর মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনপিআর-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস নিজেই ৫ আগস্ট-পরবর্তী হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছিলেন। সে সময় জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোও সংবাদটি প্রকাশ করে।
ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার প্রধান যদি সত্যকে অস্বীকার করেন, তবে সংখ্যালঘুদের প্রতি চলমান বৈষম্য ও সহিংসতা আরও বাড়তে পারে। তাই তারা দ্রুত এ বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সংখ্যালঘু সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।