
ফরিদপুরে স্পিডবোট দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন দুর্গা রানী রায়, আহত ৮ জন
HindusNews Desk:
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গোপালপুর ঘাট থেকে দোহার উপজেলার চর মৈনট ঘাটে যাত্রীবাহী একটি স্পিডবোট ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে পদ্মা নদীর স্রোত ও ঢেউয়ের তোড়ে স্পিডবোটটির তলা ফেটে উল্টে গেলে দুর্গা রানী রায় (৫৭) নামের এক নারী নিহত হন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও আটজন যাত্রী।
নিহত দুর্গা রানী রায় চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের জয়দেব সরকারের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা এবং বিমল রায়ের স্ত্রী। দুর্ঘটনার সময় তার নাতি তিন বছরের শিশু লক্ষণ রায়ও স্পিডবোটে ছিলেন, তবে ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও সে আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুর্ঘটনার পর স্পিডবোটে থাকা যাত্রীরা প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা নদীতে ভেসে ছিলেন। পরে আরেকটি স্পিডবোট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালায়। নৌযানটিতে মোট ১৮ জন যাত্রী ছিলেন, যদিও নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১২ জন যাত্রী বহন করার কথা।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—মারিয়া আক্তার (২৫), সিফা আক্তার (২০), মাসুদ আলম (২৯)সহ আরও কয়েকজন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে দ্রুত চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আহত যাত্রী সদরপুর উপজেলার চর রাম নগর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ আলম অভিযোগ করে বলেন,
> “নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হয়েছিল। নদীর স্রোত ও ঢেউয়ে বোটের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে তলা ফেটে যায়। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।”
চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ননী গোপাল হালদার জানান,
> “একজনকে মৃত অবস্থায় এবং আটজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। আহতদের মধ্যে মারিয়ার শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
চরভদ্রাসন থানার ওসি রজিউল্লাহ খান বলেন,
> “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যাই এবং নৌবাহিনীকে অবহিত করি।”
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা খাতুন জানান,
> “আমরা হাসপাতালে এসে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছি। বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি কোনো অবহেলা প্রমাণিত হয় তবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতের পরিবার ও আহত যাত্রীদের মধ্যে গভীর শোক নেমে এসেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এমন দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। তারা নৌযান নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা দাবি করেছেন।