
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র অপূর্বর কুরআন অবমাননা: ধর্মান্তর, ড্রাগ আসক্তি ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রশ্ন
ঢাকা;
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) সাবেক শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল, যিনি ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন, সম্প্রতি কুরআন অবমাননার অভিযোগে বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন। এই ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে, এবং অপূর্বর অতীত জীবন, ড্রাগ আসক্তি ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অপূর্ব পাল, যিনি ইসলাম গ্রহণের পর নাম পরিবর্তন করেন এবং নিয়মিত ধর্মচর্চা করতেন বলে জানা গেছে, ২০২৩ সালের শেষের দিকে ধর্মান্তরিত হন। তার প্রাক্তন শিক্ষক জানিয়েছেন যে, অপূর্ব জোব্বা ও পাগড়ি পরে ক্লাস করতেন। কিন্তু পরবর্তীতে, তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। জানা যায়, তিনি ড্রাগে আসক্ত হয়ে পড়েন এবং মানসিক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে অপূর্বকে ক্যাম্পাসে প্রায়ই অদ্ভুত আচরণ করতে দেখা যেত। তিনি এনএসইউ ও বসুন্ধরার মসজিদে গিয়ে টুপি না পরা বা টাকনুর উপর কাপড় না পরা ব্যক্তিদের বকাঝকা করতেন। এই ধরনের আচরণের কারণে ক্যাম্পাসে ভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীদের সাথে তার একাধিক ঝামেলা হয়। তার বৃদ্ধ মা তাকে সুস্থ করার জন্য বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
ড্রাগ আসক্তি ও অস্বাভাবিক আচরণের কারণে ২০২৪ সালে অপূর্বকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে, মানবিক দিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে পুনরায় পড়াশোনার সুযোগ দিয়েছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তার ড্রাগ সমস্যা বা মানসিক সমস্যার কোনোটিরই যথাযথ চিকিৎসা হয়নি।
এই ঘটনার পর অপূর্বর শিক্ষক জোরালোভাবে বলেছেন যে, অপূর্ব একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম এবং হিন্দু নন। তিনি এই সত্য অস্বীকার না করার উপর জোর দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, কুরআন অবমাননার জন্য মুসলিম হিসেবেই তার বিচার হওয়া উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, একজন ব্যক্তির অপরাধের জন্য গোটা হিন্দু সম্প্রদায়কে টার্গেট করা অন্যায়। শিক্ষকের মতে, অপূর্ব যা করেছেন, তা মানসিকভাবে অসুস্থ অবস্থায় করেছেন এবং এটি কোনো বড় ষড়যন্ত্র নয়, বরং একজন মানসিক রোগীর কাজ।
বর্তমানে, সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে অপূর্বর কঠোর শাস্তির পাশাপাশি তার মানসিক সমস্যা ও ড্রাগ আসক্তির চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তার দ্রুত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (রিহ্যাব) পাঠানো সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের পেনাল কোড অনুযায়ী, এ ধরনের কাজ সাম্প্রদায়িক হিংসা-প্ররোচনার মতো অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।