
লালমনিরহাটে দুর্গাপূজা মণ্ডপের স্বেচ্ছাসেবকদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, গুরুতর আহত ৪
নিজস্ব প্রতিবেদক :
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের ভাদাই রহিমা বাজার এলাকায় পূজা মণ্ডপে দায়িত্ব পালনরত সনাতনী সম্প্রদায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের উপর সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দির থেকে বাড়ি ফেরার পথে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী ও কিশোরীদেরকে স্থানীয় কয়েকজন যুবক অশ্লীল ভাষায় উত্যক্ত করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে মীমাংসা করা হলেও, সেই ঘটনার জের ধরেই ৩ অক্টোবর সকালে পুনরায় হামলার ঘটনা ঘটে।
সেদিন সকালে ভাদাই রহিমা বাজার এলাকায় মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবক সদস্য অনুকুল চন্দ্র রায় (২২) ও নয়ন চন্দ্র রায় (১৭)-এর উপর লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়। অনুকুল চন্দ্র রায়ের মাথায় লোহার রডের আঘাতে গুরুতর জখম হয় এবং নয়ন চন্দ্র রায়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। পরে আহতদের উদ্ধারে গেলে স্বেচ্ছাসেবক তীর্থ চন্দ্র রায় (২১) ও গোপাল চন্দ্র রায় (৪৮)-এর উপরও হামলা চালানো হয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গোপাল চন্দ্র রায় রক্তাক্ত হন এবং তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী বিশাম চন্দ্র রায় বলেন, “এটি সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত হামলা। ২০ জন দূর্বৃত্ত এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি এতে জড়িত ছিল। তারা পূজার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে।”
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যেখানে চিকিৎসকরা তাঁদের অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, হামলার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে, এবং এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এতে ক্ষোভ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।
সচেতন মহল বলছে, ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে এ ধরনের হামলা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য ভয়াবহ হুমকি। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও দোষীদের কঠোর শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরও বাড়তে পারে।