বীরগঞ্জে শতবর্ষী পূজার প্রতিমা ভাঙচুর: পুলিশ বলছে “বৃষ্টি”, স্থানীয়দের দাবি “পরিকল্পিত হামলা”

5 days ago
VIEWS: 181

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ৭ নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে শতবর্ষী পারিবারিক মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের অভিযোগ অনুযায়ী, গত ৩ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার রাতে আনুমানিক ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে কিছু দুর্বৃত্ত একটি শতবর্ষী পারিবারিক পূজার প্রতিমা ভাঙচুর করে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিমা ভাঙচুরের খবর জানাজানি হওয়ার পর শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী ওই পূজা পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, এই পূজা তাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে চলে আসছে, এবং দীর্ঘ শতাব্দী ধরে এমন অবমাননাকর ঘটনা কখনও ঘটেনি। তাদের দাবি, ঘটনাটি সম্পূর্ণ পরিকল্পিত, এবং দুর্বৃত্তরা রাতে প্রতিমাগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে ভেঙে ফেলে পালিয়ে যায়।

অন্যদিকে, পুলিশের দাবি ভিন্ন। বীরগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি কোনো হামলার ঘটনা নয়, বরং বৃষ্টির কারণে প্রতিমা ভেঙে পড়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, “প্রতিমা ভাঙার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, প্রতিমার মাটি নরম হয়ে বৃষ্টির ফলে ভেঙে গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘হামলা’ হিসেবে প্রচারিত খবরটি বিভ্রান্তিকর।”

তবে স্থানীয়দের বক্তব্য একেবারেই ভিন্ন। তারা দাবি করছেন, সেদিন রাতে এলাকায় কোনো বৃষ্টি হয়নি। বরং তারা প্রতিমার পাশে ভাঙা অস্ত্র, হাত ও মুখের অংশ খুঁজে পান, যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় এটি মানুষের হাতেই ঘটেছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা হিন্দুসনিউজকে বলেন, “আমরা প্রতিমার পাশে ভাঙা অংশগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেছি। এগুলো পড়ে যাওয়ার মতোভাবে নয়, বরং আঘাত করে ভাঙা হয়েছে।”

ঘটনার পরপরই ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনাটি প্রকাশ্যে না আসার জন্য রাতারাতি প্রতিমাগুলো ভাসিয়ে দেওয়া হয়। তারা জানান, ৭ নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোপাল দেব শর্মা এবং স্থানীয় ইউনিয়ন ও থানা বিএনপির কয়েকজন নেতা এই ঘটনায় জড়িত থাকতে পারেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত প্রতিমাগুলো সরিয়ে ফেলেন, যাতে প্রমাণ নষ্ট হয়।

এই ঘটনার পর থেকে মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তারা মনে করছেন, প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি “বৃষ্টির অজুহাত” দিয়ে আড়াল করতে চাইছে। অনেকেই বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা ঘটলে সবসময় একইভাবে “প্রাকৃতিক কারণ” দেখিয়ে তা ধামাচাপা দেওয়া হয়, যা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাকে আরও দুর্বল করে দেয়।

হিন্দুসনিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিক ও পূজারি জানিয়েছেন যে প্রতিমা ভাঙার চিহ্নগুলো দেখে মনে হয় সেগুলো মানুষের হাতেই ভাঙা হয়েছে, কোনো প্রাকৃতিক কারণে নয়। তারা দাবি করেন, বৃষ্টির অজুহাত দিয়ে এই ঘটনার রাজনৈতিক দিক আড়াল করার চেষ্টা চলছে।

দিনাজপুরের বীরগঞ্জের এই ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র হতাশা তৈরি হয়েছে। তারা প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সরকারের কাছে তাদের ধর্মীয় স্থাপনা ও পূজার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন