
ঢাকা মেডিকেলের ছাত্রী নন্দিনী রাণীর করুণ মৃত্যু: দুর্গাপূজায় অতিরিক্ত মদ্যপানেই জীবনাবসান
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মানিকগঞ্জ জেলার গিলন্ড গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী কন্যা নন্দিনী রাণী সরকার এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৩৩তম স্থান অর্জন করে সারা দেশের মানুষের দৃষ্টি কেড়েছিলেন। নিজের মেধা ও অধ্যবসায়ে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। অর্থাভাব তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে অনিশ্চিত করে তুললেও, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর অসংখ্য শুভানুধ্যায়ী ও প্রতিষ্ঠান তার পাশে দাঁড়ান। সবাই চেয়েছিল—এই মেধাবী মেয়েটি একদিন দেশসেবায় আত্মনিয়োগ করবে।
কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে সেই স্বপ্ন আজ অপূর্ণ রয়ে গেল। দুর্গাপূজার ছুটিতে নন্দিনী রাণী শৈলকুপার ভান্ডারিয়াপাড়া দিদার বাড়িতে বেড়াতে যান। দশমীর দিন বন্ধু-বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডার এক পর্যায়ে তিনি অতিরিক্ত মদ্যপান করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মদ্যপানের পরপরই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় নন্দিনী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। যেই মেয়েটি একসময় অর্থের অভাবে চিকিৎসা শিক্ষার স্বপ্ন হারাতে বসেছিল, সমাজের সহায়তায় আবার উঠে দাঁড়িয়েছিল—তার এমন মৃত্যু সকলকে হতবাক করেছে।
স্থানীয়রা জানান, নন্দিনী ছিল অত্যন্ত মেধাবী, বিনয়ী ও স্বপ্নবাজ একটি মেয়ে। ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু অকালেই থেমে গেল সেই সম্ভাবনাময় জীবনের পথচলা।
সামাজিকভাবে অনেকে এই ঘটনাকে তরুণ সমাজের উচ্ছৃঙ্খলতা ও মদ্যপান সংস্কৃতির ক্ষতিকর প্রভাবের করুণ উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছেন। দুর্গাপূজার মতো আনন্দঘন উৎসবে মদ্যপান প্রতিযোগিতায় নামা তরুণদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।