ভারতে গ্রেপ্তার আইএসআই এজেন্ট ওয়াসিম আকরাম

5 days ago
VIEWS: 154

HindusNews আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই (Inter-Services Intelligence)–এর এক সক্রিয় এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃত ব্যক্তির নাম ওয়াসিম আকরাম। তিনি হরিয়ানার পালওয়াল জেলার ওয়াসিম কোট গ্রামের বাসিন্দা। গত বুধবার (১ অক্টোবর) সকালে স্থানীয় পুলিশ এক বিশেষ অভিযানে তাঁকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে।

তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ওয়াসিম আকরাম পাকিস্তানের আইএসআইয়ের হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে গুপ্তচরবৃত্তি চালাতেন। এর আগে একই মামলায় মো. তৌফিক নামে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যার বাড়ি একই জেলার আলিমেভ গ্রামে। তৌফিকের জবানবন্দি থেকেই পুলিশের হাতে আসে ওয়াসিম আকরামের নাম। পুলিশ জানিয়েছে, এই দু’জনেরই পাকিস্তানের আইএসআই এবং নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান হাই কমিশনের (PHC) ভিসা ডেস্কের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল। তাঁরা ইন্টারনেট কল ও এনক্রিপটেড অ্যাপ ব্যবহার করে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ওয়াসিম আকরামের মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ সংবেদনশীল ও দেশবিরোধী তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। যদিও তিনি কিছু তথ্য মুছে ফেলেছিলেন, তবে সাইবার সেলের বিশেষজ্ঞরা তা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।

তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে—পাকিস্তান হাই কমিশনের ভিসা ডেস্ককে ব্যবহার করে চলছিল এই গুপ্তচরবৃত্তির কার্যক্রম। ভিসা প্রদানের নামে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করা হতো, যার একটি বড় অংশ পাকিস্তান হাই কমিশনের কিছু কর্মকর্তার হাতে পৌঁছে যেত। এই তহবিল পরবর্তীতে পাকিস্তান থেকে আসা আইএসআই এজেন্টদের ভারতে অবস্থান ও নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ব্যবহার করা হতো।

ওয়াসিম আকরাম ২০২২ সালের মে মাসে পাকিস্তানের কাসুরে গিয়েছিলেন। জানা যায়, ভিসা পাওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান হাই কমিশনের এক কর্মকর্তা—জাফর ওরফে মুজাম্মিল হুসেনকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দেওয়ার পর তিনি ভিসা পান। পাকিস্তান সফরের পর থেকেই ওয়াসিম আকরাম নিয়মিতভাবে জাফরের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখেন এবং তার নির্দেশে কাজ করতে থাকেন।

ভারতীয় তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওয়াসিম আকরাম শুধু তথ্য আদানপ্রদানেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, বরং পাকিস্তানের পক্ষে সক্রিয়ভাবে অর্থ সংগ্রহেও ভূমিকা রাখতেন। তিনি ভিসা প্রক্রিয়ার নাম করে বিভিন্ন আবেদনকারীর কাছ থেকে ঘুষ আদায় করতেন এবং সেই অর্থের একটি অংশ পাকিস্তানি কূটনীতিকদের কাছে পৌঁছে দিতেন। তদন্তে পাওয়া ব্যাংক নথি অনুযায়ী, ওয়াসিম আকরামের অ্যাকাউন্টে প্রায় ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকার লেনদেনের তথ্য মিলেছে। এছাড়া তিনি পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের হাতে সিম কার্ড, ওটিপি ও বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ সরবরাহ করেছেন।

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, ওয়াসিম আকরাম এবং মো. তৌফিক ভারতীয় সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাকিস্তানের হাতে তুলে দিয়েছেন, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছিল।

হরিয়ানা পুলিশের এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন,

> “ওয়াসিম আকরাম একজন সংগঠিত নেটওয়ার্কের অংশ ছিল। তার পেছনে আরও কয়েকজন পাকিস্তানি যোগাযোগ রক্ষাকারী ছিল বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। সাইবার ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও ব্যাংক নথি যাচাইয়ের পর পুরো নেটওয়ার্কটি উন্মোচন করা সম্ভব হবে।”

এদিকে, এই ঘটনার পর ভারত সরকার পাকিস্তান হাই কমিশনের দুই কর্মী—জাফর (ওরফে মুজাম্মিল হুসেন) ও দানিশকে দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, এই দুই ব্যক্তি ভারতীয় ভূখণ্ডে আইএসআইয়ের হয়ে কাজ করছিলেন এবং গুপ্তচর নেটওয়ার্ক পরিচালনার মূল দায়িত্বে ছিলেন।

ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই গ্রেপ্তার ভারতজুড়ে আইএসআইয়ের গুপ্তচর নেটওয়ার্ক উন্মোচনে একটি বড় অগ্রগতি। পাকিস্তানের হাই কমিশনের ভিসা ডেস্কের মাধ্যমে বারবার এমন দেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া উদ্বেগের বিষয়।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন