

মহা প্রবারণা পূর্ণিমা ও কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা উদযাপনে নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে ভক্তদের ঢল
হৃদয় দাস, নিজস্ব প্রতিবেদক :
গতকাল সারা দেশে পালিত হয়েছে মহা প্রবারণা পূর্ণিমা ও কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। এই দুটি শুভ তিথি উপলক্ষে কক্সবাজার শহরের নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে ছিল ভক্ত-শ্রদ্ধালুদের উপচেপড়া ভিড়। সকাল থেকেই বৌদ্ধ ভিক্ষু ও সাধারণ মানুষ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন, সন্ধ্যা ঘনালে আকাশজুড়ে রঙিন ফানুশে জ্বলে ওঠে ভক্তির আলো।
দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ নন্দনকানন বিহারে সমবেত হন শুধুমাত্র ফানুশ উড়ানোর আনন্দ ভাগাভাগি করতে। ভক্তদের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছিল একটাই মন্ত্রধ্বনি—
“বুদ্ধ, ধর্ম, সংঘ—জগতে সকল প্রাণী সুখী হোক, দুঃখ থেকে মুক্তি পাক, রোগ থেকে মুক্তি হোক।”
স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবীণরা জানান, প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এই দিনেই তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাস শেষ করে ভিক্ষুরা আত্মশুদ্ধি ও পরস্পর ক্ষমাপ্রার্থনার মধ্য দিয়ে প্রবারণার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। মূল লক্ষ্য—বিশ্ব শান্তি, সহমর্মিতা ও সর্বজনীন কল্যাণ কামনা।
নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়,
“বিশ্বের সকল প্রাণীর সুখ, শান্তি ও মঙ্গল কামনায় আমরা প্রার্থনা করছি। প্রবারণার শুভক্ষণে পৃথিবীর সকল মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।”
বৌদ্ধ ধর্মীয় আচার অনুযায়ী, প্রবারণা পূর্ণিমার পর থেকেই শুরু হয় কঠিন চীবরদান উৎসব। জানা গেছে, আগামী দিনগুলোতে কক্সবাজারসহ দেশের প্রত্যেক উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ধারাবাহিকভাবে চীবরদান অনুষ্ঠিত হবে।
কোজাগরী পূর্ণিমার এই রাতে একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় লক্ষ্মী পূজা, যেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সম্পদ ও কল্যাণের দেবী লক্ষ্মীর পূজায় মগ্ন ছিলেন। ফলে গতকাল দিনটি বৌদ্ধ ও হিন্দু উভয় সম্প্রদায়ের কাছে হয়ে উঠেছে গভীর ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতার দিন।