
ধর্ম অবমাননার শাস্তি ফাঁসি রেখে আইন প্রণয়নের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক :
কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ। একইসঙ্গে কোরআন শরিফ, হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও ধর্মের অবমাননার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ফাঁসি দেওয়ার বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। সোমবার (৬ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই দাবিগুলো জানানো হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি হেমায়েতুল্লাহ কাশেমী। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করিম আবরার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, দেশের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঠামোগত ইসলাম বিদ্বেষ কাজ করছে। এই বিদ্বেষ থেকেই ধর্ম অবমাননার মতো ঘটনাগুলো ঘটছে। মুসলমানরা আল-কোরআন ও প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করে, তাদের প্রতি সহানুভূতির কোনো সুযোগ নেই।
অপূর্ব পালকে ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে মুফতি রেজাউল করিম বলেন, এ বছর দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু কিছু চক্র সবসময় ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে, তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে বহির্বিশ্বে মৌলবাদী দেশ হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়। এই ঘটনার পেছনে সেই চক্রেরই হাত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আইন নিজের হাতে তুলে নিতে চাই না। তবে যারা কোরআন অবমাননা করে, তাদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।” তিনি আরও বলেন, ধর্ম অবমাননা বন্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে কঠোর আইন প্রণয়ন করা সময়ের দাবি। যেমন রাষ্ট্রদ্রোহের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে, তেমনি কোরআন শরিফ, হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও ধর্মের অবমাননার ক্ষেত্রেও ফাঁসির বিধান রাখতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পূজা-পার্বণকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। তারা বিভিন্ন ঘটনার মাধ্যমে মুসলিমদের উত্তেজিত করে বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়। বক্তারা সরকারকে আহ্বান জানান যেন ধর্মীয় সহাবস্থানের নামে ইসলামবিরোধী উস্কানি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি আব্দুল আজিজ কাশেমীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধনের শেষে ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননা প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রণয়নের দাবি জানানো হয় এবং অপূর্ব পালের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের আহ্বান জানানো হয়।