
রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার দরবারে হামলার রিপন রায় নামে এক হিন্দু যুবক গ্রেপ্তার!
রাজবাড়ী প্রতিনিধি :
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার দরবারে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় রিপন রায় (২৯) নামে এক হিন্দু যুবককে আটক করেছে পুলিশ।তিনি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম সরকারপাড়ার বাসিন্দা।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রিপনের বাড়ি থেকে নুরাল পাগলার বাড়ি লুট হওয়া একটি খাটের চরাট (মাচা) উদ্ধার করা হয়েছে। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় রিপনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং সোমবার সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রোববার রাতে নিজ এলাকা থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, “গোয়েন্দা তথ্য ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও যাচাই করে রিপনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাচ্ছে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”
এ নিয়ে নুরাল পাগলার দরবারে হামলার ঘটনায় মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর নুরাল পাগলার কবর কয়েক ফুট নিচে নামানোসহ কয়েকটি দাবি জানিয়ে ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’ ও ‘তৌহিদী জনতা’ নামে দুটি সংগঠন গোয়ালন্দ বাজারের আনসার ক্লাবে একটি সমাবেশের আয়োজন করে। ওই সমাবেশ থেকেই উত্তেজিত একটি দল নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুলিশের ওপর হামলা চালায় এবং পুলিশের দুটি গাড়ি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি ভাঙচুর করে। এরপর একদল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নুরাল পাগলার দরবার ও বাড়িতে একাধিকবার হামলা চালায়, ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
ঘটনার পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর রাতে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় একটি মামলা এবং ৮ সেপ্টেম্বর রাতে দরবারে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। প্রথম মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, আর দ্বিতীয় মামলায় রিপন রায়সহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গোয়ালন্দের স্থানীয় সনাতন সম্প্রদায় ও নুরাল পাগলার অনুসারীরা প্রশাসনের প্রতি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তারা জানিয়েছেন, নুরাল পাগলার দরবার শুধু ধর্মীয় স্থান নয়, বরং এটি স্থানীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির প্রতীক হিসেবেও পরিচিত ছিল।
এ ঘটনায় এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে, তবে পুলিশ জানিয়েছে,পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।