
মণিরামপুরে এক সন্তানের জননীর সাথে দুই সন্তানের জনকের পরকীয়া! ভেঙে গেল ১৬ বছরের সুখের সংসার
HindusNews ডেস্ক :
যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের হরিদাসকাঠি গ্রামের কর্মকার পাড়ায় চাঞ্চল্যকর এক পরকীয়ার ঘটনায় ভেঙে গেল ১৬ বছরের সুখের সংসার।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার এক স্বর্ণকারের স্ত্রী—এক কন্যা সন্তানের জননী—ফেসবুকের মাধ্যমে পাশ্ববর্তী উপজেলা অভয়নগরের ঘোড়াদাইড় গ্রামের দুই সন্তানের জনক রাকেশ হৃদয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
জানা যায়, স্বামী হাজিরহাট বাজারে জুয়েলার্সের ব্যবসা পরিচালনা করেন। সংসারে কোনো অশান্তি না থাকলেও ফেসবুকের ভার্চুয়াল বন্ধুত্বই কাল হয়ে দাঁড়ায় এই দম্পতির জন্য। প্রায় দেড় মাস আগে রাকেশ হৃদয়কে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাদের যোগাযোগ। এরপর ধীরে ধীরে ফোনে কথোপকথন ও চ্যাটের মাধ্যমে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা।
প্রযুক্তির অপব্যবহার ও অনিয়ন্ত্রিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি থেকে এ ধরনের সম্পর্কের জন্ম ঘটছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিশেষ করে বিবাহিত নারী-পুরুষের মধ্যে বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, আর প্রেম থেকে পরকীয়া সম্পর্কের কারণে ভাঙছে অসংখ্য সংসার।
এদিকে দুর্গোৎসব চলাকালীন সময়ে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। হাজিরহাট পূজা মণ্ডপে চলমান উৎসবের সুযোগে গত শনিবার রাতে ওই গৃহবধূ তার প্রেমিক রাকেশ হৃদয়কে নিজের বাড়িতে ডেকে আনেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু বিষয়টি টের পেয়ে যান স্বামী। রাত ১২টার দিকে ঘরে প্রবেশ করে স্ত্রী ও প্রেমিককে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ঘরের দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেন।
পরদিন সকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে তালা খুলে দুজনকে আটক করা হয়। এরপর এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে শুরু হয় উত্তেজনা ও মারপিটের ঘটনা। উপস্থিত ছিলেন হাজিরহাট পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বিকাশ রায়, হরিদাসকাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নবিরুজ্জামান আজাদসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সালিশি বৈঠকে গৃহবধূ জানিয়ে দেন, তিনি আর স্বামীর সঙ্গে সংসার করবেন না, বরং প্রেমিক রাকেশ হৃদয়কে বিয়ে করতে চান। অপরদিকে স্বামী বলেন, “আমি সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি, আমি এই কলঙ্কিনী নারীর সঙ্গে আর সংসার করতে চাই না।”
পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উভয় পরিবারের অভিভাবকদের ডেকে এনে বিষয়টি মীমাংসা করেন। রাকেশ ও গৃহবধূসহ সংশ্লিষ্টরা এক লিখিত সম্মতিপত্রে (স্ট্যাম্পে) স্বাক্ষর করেন এবং অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হয়।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, “ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।”
এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, প্রযুক্তির অপব্যবহার ও ফেসবুক আসক্তিই আজ সমাজে অশান্তি ও পারিবারিক ভাঙনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।