
লাভ জিহাদের ফাঁদে পড়ে ঘর ছাড়ল হিন্দু কিশোরী; ১২ দিন পর পুলিশের অভিযানে উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক :
গাজীপুরে সহপাঠী মুসলিম কিশোরের প্রেমের ফাঁদে পড়ে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে এক হিন্দু কিশোরী। ১২ দিন পর পুলিশ রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় জিহাদী কিশোরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী হিন্দু কিশোরী গাজীপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মাইলস্টোন স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। প্রায় চার বছর আগে সে একই শ্রেণিতে পড়া এক মুসলিম কিশোরের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক আবেগে পরিণত হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই মুসলিম কিশোর পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় অনুভূতি ও ভালোবাসার প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে লাভ জিহাদের ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে প্রভাবিত করে আসছিল।
পরবর্তীতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে পরিবারের অগোচরে ঘর থেকে বের হয়ে যায় ওই হিন্দু কিশোরী। পরদিন সকালে মেয়েকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে মোবাইল ফোনের কিছু বার্তা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলাপচারিতা থেকে বিষয়টি পরিষ্কার হয় যে, কিশোরীটি ওই মুসলিম সহপাঠীর প্ররোচনায় ঘর ছেড়েছে।
ভুক্তভোগীর মা তখন গাজীপুরের বাসন থানায় মামলা (নং-৩১) দায়ের করেন। মামলাটি গ্রহণের পর পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় একাধিক জেলায় অভিযান চালায়। গাজীপুর ছাড়াও বরিশাল, খুলনা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধানের পর অবশেষে ৭ অক্টোবর ভোররাতে রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, লাভ জিহাদ নামক এ ধরনের পরিকল্পিত ধর্মীয় প্ররোচনার মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের বিপথে নেওয়া এখন নিয়মিত অপরাধে পরিণত হচ্ছে, অথচ প্রশাসন ও সমাজ এখনো এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ।
হিন্দু সমাজের নেতারা বলেন, এমন ঘটনাগুলো শুধু একটি পরিবারের নয়, পুরো সম্প্রদায়ের মানসিক নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারা দাবি জানান, রাষ্ট্রের উচিত এসব ঘটনায় “লাভ জিহাদ প্রতিরোধ আইন” প্রণয়ন করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ধর্মের প্রলোভন বা প্রতারণার মাধ্যমে অন্য ধর্মের নারী বা কিশোরীদের বিপথে নিতে না পারে।
একজন সমাজকর্মী HindusNews-কে বলেন,
“এই ধরনের ঘটনা সমাজে নীরব সন্ত্রাসের মতো কাজ করছে। মেয়েদের সচেতন করতে পরিবার, বিদ্যালয় এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে। শুধুমাত্র উদ্ধার করলেই হবে না—মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক পুনর্বাসনও জরুরি।”