
আরজি করের পর ফের পশ্চিমবঙ্গে মেডিকেল শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার! ক্ষোভে ফুঁসছে রাজ্য
HindusNews ডেস্ক :
আরজি কর মেডিকেল কলেজে ছাত্রীর উপর নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পরও পশ্চিমবঙ্গ যেন শিক্ষা নেয়নি। আবারও এক মেডিকেল শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে কাঁপছে রাজ্য। এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে অবস্থিত একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে।
ওই তরুণী মেডিকেলের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং পাশের রাজ্য ওড়িশার জলেশ্বর এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে সহপাঠীর সঙ্গে ক্যাম্পাসের বাইরে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন তিনি। খাবার শেষে ফেরার পথে কিছু দুর্বৃত্ত তাদের পথ আটকে দেয়। তরুণীর মোবাইল ছিনিয়ে নেয় এবং হঠাৎই তাকে পাশের জঙ্গলে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে দুর্গাপুর নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত তরুণীকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও তিনি মারাত্মক মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ধর্ষিতার বাবা সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মেয়ের এক বন্ধু ফোন করে ঘটনা জানায়। তিনি বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি দুর্গাপুরে চলে আসি। জানতে পারি, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমার মেয়েকে এক সহপাঠী খাবার খেতে ক্যাম্পাস গেটের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল। তখন ২-৩ জন ছেলে তাদের ঘিরে ফেলে। যে ছেলেটি আমার মেয়ের সঙ্গে ছিল, সে পালিয়ে যায়, আর আমার মেয়েকে টেনে নিয়ে যায় জঙ্গলে। সেখানে এক তরুণ তাকে ধর্ষণ করে।”
এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ, তবে তদন্তে গতি আনতে ইতোমধ্যে বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল কল রেকর্ড বিশ্লেষণ করে দুষ্কৃতীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্গাপুর মেডিকেল কলেজসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।
ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত কেউই রেহাই পাবে না। বাংলার পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে। দুর্গাপুরের ঘটনাকে প্রশাসন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #JusticeForDurgapurMedStudent হ্যাশট্যাগে চলছে প্রতিবাদের ঢল। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, আরজি করের ঘটনার পরও প্রশাসনের নজরদারির ঘাটতি থেকেই এই ভয়াবহতা আবার ঘটল।
রাজ্যের সাধারণ মানুষ, চিকিৎসক সমাজ ও শিক্ষার্থীরা একবাক্যে বলছেন— এখন সময় কঠোর পদক্ষেপের। আর নয় ‘অপেক্ষা’, প্রয়োজন দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।