আজ ১৩ অক্টোবর। ২০২১ সালের এই দিনেই বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর নেমে এসেছিল ভয়ঙ্কর 'রক্তাক্ত শারদ '!

6 week ago
VIEWS: 132

HindusNews প্রতিবেদন :

আজ ১৩ অক্টোবর। ২০২১ সালের এই দিনটি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য কেটে গেছে ভয়ঙ্কর স্মৃতির সঙ্গে। সেই বছর দুর্গাপূজার অষ্টমীর দিন, কুমিল্লা জেলার নানুয়া দীঘির পাড়ে ঘটে এক ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, যা পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।

ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি বিভ্রান্তিকর গুজব থেকে। কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপের পাশে “কুরআন অবমাননা” হয়েছে এমন ছড়ানো খবর মুহূর্তেই উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ও পোস্টের মাধ্যমে এই বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, এবং অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

এই গুজবের প্রভাবে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, পূজামণ্ডপ, দোকান ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। বহু মন্দির ভাঙচুর করা হয়, প্রতিমা ভেঙে ফেলা হয়, এবং দেবালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে কয়েকজনের। শতাধিক মানুষ আহত হয়, এবং শত শত পরিবার আতঙ্কে গ্রাম ও শহর ছাড়তে বাধ্য হয়।

প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সরকার তৎক্ষণাৎ তদন্তের আশ্বাস দেয়, তবে এই ঘটনা দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

তবে তদন্তে উঠে আসে, ইকবাল নামক এক যুব পরিকল্পিতভাবে প্রতিমার পায়ের কাছে কুরআন রেখে আসে। কিন্তু পরে তাকে পাগল বা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে ছেড়ে দেয়া হয়।

কুমিল্লার ঘটনা কেবল একটি সহিংসতার ঘটনা নয়; এটি ছিল বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তিকে কাঁপিয়ে দেওয়া এক সতর্ক সংকেত। বহু নিরপরাধ সনাতনী নাগরিকের জীবন ও বিশ্বাস ক্ষতবিক্ষত হয়। মন্দির-মণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০২১ সালে কুমিল্লায় ১২টি, নোয়াখালীতে ৩২টি, চাঁদপুরে ১০টিসহ মোট ৫৪টি মামলা দায়ের হয়।এসময় ৭ জন সনাতনী প্রাণ হারান এবং প্রায় শতাধিক আহত হন। অসংখ্য পুজামন্ডপ, মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়।

কুমিল্লার ঘটনায় আদালতে দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে ইকবালসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়। তবে দুই বছরের মধ্যে সকলে জামিনে মুক্ত হয়ে যান। এই ঘটনায় দেশবাসী উপলব্ধি করে যে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে সচেতনতা, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দায়িত্বশীল ব্যবহার অপরিহার্য।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন