
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মুখোশধারী ডাকাতদের হামলায় প্রাণ গেল বিমলা পোদ্দারের!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালোড়া এলাকায় ভয়াবহ এক ডাকাতি ও হত্যা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) গভীর রাতে নিজ বাড়িতে বিমলা পোদ্দার (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে প্রায় সাত লাখ টাকা লুট করেছে একদল মুখোশধারী ডাকাত।
পুলিশের তথ্যমতে, তালোড়া বাজার এলাকার মৃত রাধেশ্যাম পোদ্দারের পাঁচ ছেলে-মেয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে খৈল-ভুসির ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। পরিবারের কেউই বিবাহিত নন। বাড়িটি দুইতলা—নিচতলায় দোকান ও গুদামঘর, আর উপরের তলায় তাদের বসবাস।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার দিকে ৫ থেকে ৭ জন মুখোশধারী ডাকাত ছাদ দিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে ফেলে এবং টাকা-পয়সা দাবি করে। পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে, ডাকাতরা বিমলা পোদ্দারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এরপর তারা ঘরে তছনছ চালিয়ে প্রায় সাত লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে বাড়ির ভেতর থেকে কান্নার শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। খবর পেয়ে দুপচাঁচিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিমলা পোদ্দারের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান,
“ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। একাধিক দল কাজ করছে। আমরা খুব শিগগিরই জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে পারব।”
এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও শোক নেমে এসেছে। এলাকার প্রবীণরা বলছেন, সম্প্রতি রাতের বেলায় বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড আগে ঘটেনি।
তালোড়া বাজারের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন ,
“বিমলা দেবী আমাদের এলাকায় খুব শান্ত-স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তিনি কখনো কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেননি। এমন নিষ্ঠুরভাবে তাঁকে হত্যা করা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না।”
বিমলা পোদ্দারের হত্যাকাণ্ড ঘিরে এখন গোটা এলাকায় শোক ও ক্ষোভের আবহ। নিরাপত্তা জোরদার এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচার দাবিতে স্থানীয়রা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।