ঘুরে গেলো সুব্রত চন্দ্র দাসের ‘হত্যা’ মামলা: পুলিশ বলছে - এটা সড়ক দুর্ঘটনা

6 week ago
VIEWS: 555

HindusNews ডেস্ক :

নোয়াখালী জেলার সুব্রত চন্দ্র দাসের মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্টি হওয়া রহস্য অবশেষে নতুন মোড় নিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এটি কুপিয়ে হত্যা নয়, বরং এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) নোয়াখালী জেলা পুলিশের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

গত ১৩ অক্টোবর দুপুরে চরজব্বর থানার ৫নং চরজুবলী ইউনিয়নের পশ্চিম চরজুবলী এলাকায় সড়কের পাশ থেকে সুব্রত চন্দ্র দাসের (৪৭) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি দ্রুতই স্থানীয়ভাবে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা’ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারের পক্ষ থেকেও চরজব্বর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়, যা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

এরপর পুলিশ তদন্তে নামে এবং তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার ভিত্তিতে মামলার মূল আসামি হিসেবে চরজুবলী ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ (৫৭)-কে শনাক্ত করে। পরবর্তীতে ১৬ অক্টোবর রাতে জেলার সুধারাম থানার ধর্মপুর ইউনিয়নের উত্তর ওয়াপদা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পূর্ব শুল্ল্যুকিয়া এলাকার জনৈক জসিম ড্রাইভারের ঘর থেকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে নূর মোহাম্মদ জানান, ঘটনার দিন তিনি তার ভাগনে ফয়সালকে (১০) নিয়ে গাছ কাটার শ্রমিকদের খাবার দিতে যাচ্ছিলেন। একই সময় সুব্রত চন্দ্র দাস তার স্ত্রী রিক্তা দাসকে আনতে ভূইয়ার হাটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সুব্রত একটি সিএনজিকে ওভারটেক করার সময় বিপরীত দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসা মোটরসাইকেল দেখে হঠাৎ ব্রেক করলে তিনি সড়কে পড়ে যান। ঠিক সেই মুহূর্তে নূর মোহাম্মদের মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনাবশত সুব্রতের উপর দিয়ে চলে যায়। এতে মোটরসাইকেলের বাম্পার ও স্ট্যান্ডে আঘাত লেগে সুব্রতের গলা কেটে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তিনজন একই ধরনের বিবরণ দিয়েছেন। তদন্তে এই তথ্যগুলোর মিল পাওয়ায় পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে যে, এটি কোনো পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নয়, বরং এক দুঃখজনক সড়ক দুর্ঘটনা।

জেলা পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘটনার পর কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই বা প্রমাণ ছাড়াই এটি ‘প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা’ হিসেবে প্রচার করা হয়, যা সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর ও অনভিপ্রেত। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে এবং প্রয়োজন হলে ফরেনসিক রিপোর্টসহ সব তথ্য যাচাই করা হবে।

১৩ অক্টোবর দুপুরে সুব্রত চন্দ্র দাসের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পর থেকে পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিষয়টিকে হত্যাকাণ্ড ভেবে ক্ষোভ ও আতঙ্কে ছিলেন। তবে পুলিশের সর্বশেষ তদন্তে পরিস্থিতি ঘুরে গেছে— এখন এটি এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা হিসেবেই চিহ্নিত হচ্ছে।

সুব্রত চন্দ্র দাসের মৃত্যুতে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের শোক এখনো কাটেনি। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা শুধু সত্যটা জানতে চাই। যেভাবেই হোক সুব্রতের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত হোক।”

নোয়াখালী জেলা পুলিশের এই নতুন তথ্যে এলাকায় আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, সত্য উদঘাটন হোক— তা যেভাবেই হোক না কেন, সুব্রতর মৃত্যু যেন ন্যায়বিচারের আলোয় আসে।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন