

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যা, স্থগিত শ্যামা পূজা!
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
রাজধানীর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র জোবায়েদ হোসেনের রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। শোকের আবহে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামীকাল সোমবার নির্ধারিত শ্রীশ্রী শ্যামা পূজা অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পূজা উদযাপন কমিটির সদস্যরা।
শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পুরান ঢাকার আর্মানিটোলা এলাকার একটি ভবনের সিঁড়ি থেকে জোবায়েদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, জোবায়েদ ওই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে টিউশন করাতে যেতেন। রাতে হঠাৎ ভবনের নিচতলায় তার দেহ দেখতে পায় বাসিন্দারা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা ছুরি ও ব্যক্তিগত কিছু সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে হত্যার কারণ সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একাধিক নেতা অভিযোগ করেন, জোবায়েদ ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী, ভদ্র ও সুশিক্ষিত ছাত্রনেতা। তার জনপ্রিয়তা ও নৈতিক অবস্থানের কারণে কেউ তাকে টার্গেট করে হত্যা করতে পারে। ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছে।
অপরদিকে, শোকের আবহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমেও পড়েছে প্রভাব। শ্যামা পূজা উদযাপন কমিটির সিনিয়র সদস্য অপু সাহা বলেন, “পুরো ক্যাম্পাস এখন শোকাহত। এই পরিস্থিতিতে আনন্দের কোনো আয়োজন করা অনুচিত। তাই শ্যামা পূজা স্থগিত রেখে নিহত ছাত্রনেতার আত্মার শান্তির জন্য বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।”
তিনি আরও জানান, আগামীকাল সন্ধ্যায় প্রিয় জোবায়েদ হোসেনকে উৎসর্গ করে ক্যাম্পাসে এক হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হবে। এরপর তাঁর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মশাল মিছিলের আয়োজন করা হবে। সবাইকে এই শোকানুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে প্রয়াত জোবায়েদ ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের আহ্বান জানান তিনি।
একজন তরুণ ছাত্রনেতার আকস্মিক মৃত্যু শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিবেশেও গভীর প্রভাব ফেলেছে। নিরাপদ ক্যাম্পাস ও জোবায়েদের হত্যার ন্যায়বিচারের দাবিতে এখন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরই নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়ের আশা।