

ঐতিহাসিক লালদীঘিতে সনাতনী জাগরণের এক বছর। লাখো ভক্তের সমাবেশে সনাতন চেতনার জাগরণ স্মরণে বিশেষ আয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
“ইতিহাস সৃষ্টি হয় প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মনে করানোর জন্য”— সেই ইতিহাসের সাক্ষী ছিল চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দান। আজ সেই মহাসমাবেশের এক বছর পূর্ণ হলো।
২০২৪ সালের ২৫ অক্টোবর, দেশের নানা প্রান্ত থেকে লাখো সনাতনী নাগরিক, ভক্ত ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা সমবেত হয়েছিলেন লালদীঘি ময়দানে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই— সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর সৃষ্টি করা।
সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র শ্রী চিন্ময় দাশের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত সেই বিশাল সমাবেশে ঘোষণা দেওয়া হয় আট দফা দাবি, যার মূল প্রতিপাদ্য ছিল—
সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ,
মন্দির ও আশ্রম সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন,
পাঠ্যপুস্তকে ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রেখে সনাতন ইতিহাস সংযোজন,
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার,
এবং জাতীয় পর্যায়ে ‘সনাতন সুরক্ষা বোর্ড’ গঠনের উদ্যোগ।
লালদীঘির সেই দিনটি পরিণত হয় এক ঐক্যের মহোৎসবে। সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে শোভাযাত্রা, পতাকা, ভক্তিগীতি ও প্রার্থনায় মুখর ছিল পুরো নগর। শত শত নারী, পুরুষ, তরুণ ও প্রবীণ সনাতনী উপস্থিত ছিলেন ভক্তিময় আবহে।
শ্রী চিন্ময় দাশ তাঁর বক্তব্যে বলেছিলেন—
“এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, এটি এক চেতনার আন্দোলন।
আমরা চাই সম্মান, নিরাপত্তা ও সমান অধিকার—যা আমাদের সাংবিধানিক প্রাপ্য।”
এক বছর পর আজ, ২০২৫ সালের ২৫ অক্টোবর, সেই ঐতিহাসিক দিনের স্মরণে সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বিভিন্ন সংগঠন দেশজুড়ে পালন করছে “জাগরণ দিবস”। লালদীঘি ময়দানে আজও আলো, ফুল ও প্রদীপে স্মরণ করা হচ্ছে সেই দিনের আত্মত্যাগ, ঐক্য ও চেতনা।
সনাতন সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, “লালদীঘির সেই দিন শুধু একটি সমাবেশ ছিল না—সেটি ছিল সনাতন চেতনার পুনর্জাগরণের দিন।”
এই দিনটি তাই আজ শুধু একটি তারিখ নয়,
এটি ইতিহাস—
সনাতনী সম্প্রদায়ের আত্মপরিচয়ের জাগরণের দিন।