
হিন্দু ধর্মে লাল সুতা বাঁধার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
নিজস্ব প্রতিবেদন:
হিন্দু ধর্মে হাতে লাল সুতা বাঁধা একটি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ আচার হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু একটি ধর্মীয় প্রথা নয়, বরং আধ্যাত্মিক সুরক্ষা, শক্তি এবং শুভ শক্তির প্রতীক হিসেবেও মানা হয়।
সাধারণত, পূজা বা যেকোনো শুভ কাজের পর পুরোহিতের মাধ্যমে হাতের কব্জিতে এই পবিত্র ডোর (তাগা) বেঁধে দেওয়া হয়। এই সুতোর রং সাধারণত লাল, গাঢ় হলুদ বা সাদা-লাল মিশ্রিত হয়। পুরুষরা এটি ডান হাতে এবং মহিলারা বাম হাতে ধারণ করেন। এটি নিজে থেকে ছিঁড়ে না যাওয়া পর্যন্ত পরা হয়, কারণ বিশ্বাস করা হয়—যতদিন এটি থাকে, ততদিন দেবী বা দেবতার আশীর্বাদও তার সঙ্গে থাকে।
বিশেষ করে বিপত্তারিণী ব্রত-এর সময় হাতে ১৩টি গিঁটযুক্ত লাল সুতা বাঁধা হয়। এ সময় একটি নির্দিষ্ট মন্ত্র পাঠ করা হয়—
🕉️ “সঙ্কটে ত্বং মহামায়ে ব্রতসুত্রং ইদং তব।
বধ্নামি বাহুমুলেঽহং বরং দেহি যথেপ্সিতং।”
জ্যোতিষশাস্ত্র মতে, সঠিক নিয়ম মেনে লাল সুতা বাঁধলে তা অশুভ দৃষ্টি, অমঙ্গল ও দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে। এই সুতোকে একটি পবিত্র তাবিজ বা তাগা হিসেবে ধরা হয়, যা দেহে ইতিবাচক শক্তির সঞ্চার ঘটায় এবং নেতিবাচক শক্তিকে প্রতিহত করে।
অনেকের মতে, লাল সুতা শুধু সুরক্ষা বা শক্তির প্রতীকই নয়, এটি ঈশ্বরের সঙ্গে এক গভীর আধ্যাত্মিক সংযোগের চিহ্ন। ভাই-বোনের সম্পর্কেও এটি ব্যবহার হয়—যেমন রাখি বন্ধন উৎসবে—যেখানে বোন ভাইয়ের হাতে পবিত্র তাগা বেঁধে তার মঙ্গল কামনা করেন।
সনাতনী বিশ্বাস অনুযায়ী, লাল সুতা বাঁধার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে দেবতাদের আশীর্বাদে সুরক্ষিত করে এবং জীবনের সব অমঙ্গল, বিপদ ও অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা পায়।