
নলছিটিতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঝালকাঠির নলছিটিতে এক সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারের পৈত্রিক সম্পত্তি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে নাচনমহল ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যের বিরুদ্ধে। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ওই ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন (৪৮) ও তার শ্বশুর আবুল কালাম (৬০)-এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সন্তোষ বিশ্বাসের ছেলে আকাশ বিশ্বাস সুজিত (৪০)।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে নলছিটি প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে ধরেন আকাশ বিশ্বাস সুজিত।
তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন একটি ভুয়া নোটারি দলিল তৈরি করে তার পৈত্রিক ফসলি জমি জবরদখলের চেষ্টা করে আসছে। প্রায় ১৫-২০ দিন আগে আনোয়ার হোসেন তার শ্বশুর আবুল কালামসহ দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই জমিতে প্রবেশের চেষ্টা করে। বাধা দিলে আনোয়ার হোসেন তাকে হত্যার হুমকি দেন।
পরবর্তীতে গত ৯ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে আবারও অস্ত্রধারী দলবল নিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে হেনস্তার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন আকাশ বিশ্বাস। তিনি জানান, তার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এরপর তিনি বিষয়টি নলছিটি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আকাশ বিশ্বাস আরও জানান, আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলেছেন। তার হুমকি-ধমকির ভয়ে ২০২৩ সালে আকাশের বাবা সন্তোষ বিশ্বাস তার দুই কন্যাকে নিয়ে ভারতে চলে যান। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ এলাকায় একা বসবাস করছেন।
আকাশ বিশ্বাসের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে তন্ময় বিশ্বাসও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিল। সে অভিযোগ করে বলে, “বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে আনোয়ার হোসেন ও তার শ্বশুর প্রায়ই ভয়ভীতি দেখায়, নানা অশোভন মন্তব্য করে।”
সংবাদ সম্মেলনে আকাশ বিশ্বাস তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, “আকাশ বিশ্বাস থানায় অভিযোগ করেছে, প্রশাসন তদন্ত করে যা সিদ্ধান্ত নেবে আমি তা মেনে নেব।”
এ বিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুস ছালাম বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে একজন এসআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিবারগুলোকে লক্ষ্য করে প্রভাবশালীদের এমন দখল প্রচেষ্টা উদ্বেগজনক। প্রশাসনের দ্রুত তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা না গেলে এ ধরনের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়বে।