
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতনী শিক্ষার্থীদের ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উদযাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করেছেন ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা উৎসব। দিনব্যাপী এই আনন্দঘন আয়োজনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পারিবারিক ও ঘরোয়া পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই উৎসবটি পরিণত হয় ভ্রাতৃ–ভগ্নীর ভালোবাসা, মমতা ও ঐক্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণে।
হিন্দু ধর্মীয় ঐতিহ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই উৎসবটি কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয়। বোনেরা ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিয়ে তার মঙ্গল, সুখ ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। পুরাণ মতে, মৃত্যুর দেবতা যম একদিন তাঁর বোন যমুনার নিমন্ত্রণে গৃহে যান এবং আশীর্বাদ করেন যে, এই তিথিতে যে ভাই নিজের বোনের হাত থেকে ফোঁটা গ্রহণ করবে, তার অকালমৃত্যুর ভয় থাকবে না। সেই ঐতিহ্য থেকেই যুগে যুগে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পালিত হয়ে আসছে ভালোবাসা ও স্নেহের প্রতীক হিসেবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দীপা দেবনাথ বলেন, “আমরা অনেকেই বাড়ি থেকে দূরে থাকি, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো সবসময় সম্ভব হয় না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমরা একে অপরকে পরিবার হিসেবেই দেখি। তাই ভাইদের মঙ্গল কামনায় নিজেরাই এই আয়োজন করি, যেন ভালোবাসা ও বন্ধনের ঘাটতি না থাকে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, এমন আয়োজন শুধু ধর্মীয় নয়, বরং এটি পারস্পরিক বন্ধন ও মানবিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে। ভাইফোঁটার দিনে শিক্ষার্থীরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায়, বোনেরা ভাইদের কপালে ফোঁটা দেন, উপহার বিনিময় করেন, আর মিলনমেলায় গান, কবিতা ও হাস্যরসের মধ্য দিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভ্রাতৃদ্বিতীয়া উৎসব সনাতনী শিক্ষার্থীদের জন্য শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে ভালোবাসা, ঐক্য ও ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতীক। এ উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা একে অপরের পাশে থাকার, বন্ধুত্ব ও পারিবারিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন।