

মহিবুল্লাহ মিয়াজীর ঘটনা ঘিরে হিন্দুদের মধ্যে উদ্বেগ-শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
গাজীপুরের টঙ্গীর টিঅ্যান্ডটি বিটিসিএল কলোনি জামে মসজিদের খতিব মুফতি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ মিয়াজীর অপহরণ নাটক ও পরবর্তী ঘটনাবলী ঘিরে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখা দিয়েছে গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি মঙ্গলবার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, “মহিবুল্লাহ মিয়াজীর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে যে ধরনের বিভ্রান্তি ও উসকানি সৃষ্টি করা হচ্ছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক।”
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কিছু উগ্র গোষ্ঠী ও ব্যক্তি এই ঘটনাকে ‘ইসকন ষড়যন্ত্র’ বলে প্রচার চালিয়ে হিন্দু ধর্মীয় আন্তর্জাতিক সংগঠন ইসকন (ISKCON) নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিন্দুদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক পোস্ট, ভিডিও ও মন্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সংগঠন দুটি তাদের বিবৃতিতে আরও জানায়, “এরই মধ্যে প্রশাসন ও তদন্তকারী সংস্থাগুলো এই ঘটনার প্রকৃত তথ্য প্রকাশ করেছে। পুলিশের আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, এই ঘটনায় ইসকন বা কোনো হিন্দু সংগঠনের সম্পৃক্ততা নেই। এটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রেক্ষাপটে সাজানো নাটক।”
বিবৃতিতে তারা আরও স্মরণ করিয়ে দেন, “এর আগেও এমন ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে দেশে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব ঘটনায় বহুবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হামলা, হত্যা ও মন্দির ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। আমরা এমন ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
সংগঠন দুটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়, “ভিত্তিহীন ও উসকানিমূলক প্রচারণার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাতে কোনো সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না হয়।”
তারা একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোকেও আহ্বান জানান— জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও শান্তি বজায় রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি তাদের বিবৃতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে শান্ত থাকতে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতির শেষে তারা বলেন, “বাংলাদেশ সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে সমাজের সব স্তরের মানুষকে।”