
পশ্চিমবঙ্গে নির্মাণাধীন জগদ্ধাত্রী প্রতিমা ভাংচুর, হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জগদ্ধাত্রী পুজার আগেই নির্মাণাধীন প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সমাজে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) গভীর রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মন্দিরবাজার থানার অন্তর্গত মল্লিকপুরের বটতলা এলাকায় এ নিন্দনীয় ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বটতলা এলাকার মৃৎশিল্পী ভক্ত দাস প্রতিবছরের মতো এ বছরও বিভিন্ন পূজা কমিটির বায়নায় জগদ্ধাত্রী প্রতিমা তৈরির কাজ করছিলেন। মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তার আটচালার বারান্দায় ঢুকে নির্মাণাধীন তিনটি প্রতিমা ভাংচুর করে। প্রতিমাগুলোর হাত, আঙুল এবং মুখমণ্ডলসহ বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে চুরমার করে দেয় তারা।
বুধবার সকালে প্রতিমা নির্মাণে আসা অন্যান্য কারিগর ও এলাকাবাসীরা এ দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যান। খবর পেয়ে স্থানীয় পূজা কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এটিকে পরিকল্পিত অপকর্ম হিসেবে দেখছেন।
এলাকাবাসীর দাবি, হিন্দু ধর্মীয় উৎসবের আগে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এতে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা লুকিয়ে আছে। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, মন্দিরবাজার থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা জানান, "আমরা ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ দোষীদের শনাক্তে অভিযান চলছে।"
প্রতিমাশিল্পী ভক্ত দাস বলেন,
> “সারা বছর অপেক্ষা করি এই সময়টার জন্য। জগদ্ধাত্রী পূজার আগে এইভাবে প্রতিমা ভাঙা মানে শুধু আমার ক্ষতি নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত। এমন ঘটনায় মনটাই ভেঙে গেছে।”
উল্লেখ্য, জগদ্ধাত্রী পূজা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় শারদীয় উৎসব। দুর্গাপূজার প্রায় এক মাস পর এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়, বিশেষ করে চন্দননগর, কৃষ্ণনগর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে মহাসমারোহে উদযাপন করা হয়।
ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বজায় রাখতে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি হিন্দু সমাজসহ সচেতন নাগরিকরা জোর দাবি জানিয়েছেন।