বাংলাদেশে গণহত্যার ছক জঙ্গিদের! ভারতের হাতে বিপজ্জনক গোয়েন্দা রিপোর্ট

4 week ago
VIEWS: 8564

নিজস্ব প্রতিবেদক :

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখন আসন্ন নির্বাচন, গণভোট ও জুলাই সনদ নিয়ে প্রবল উত্তেজনার মধ্যে আছে, ঠিক সেই সময় দেশের ভেতরে ভয়ঙ্কর এক ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত মিলেছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির হাতে সম্প্রতি এমন একটি রিপোর্ট এসেছে, যেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে— বাংলাদেশের কট্টরপন্থী ও মৌলবাদী সংগঠনগুলো এখন একজোট হয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, তাদের লক্ষ্য ১৯৪৬ সালের নোয়াখালি দাঙ্গার আদলে দেশজুড়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়ে হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অস্তিত্বকে নিশ্চিহ্ন করা। ভারতীয় গোয়েন্দারা বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও পাঠিয়েছে।

এই ষড়যন্ত্রের সূচনা হয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর এক খতিব, মুহিবুল্লা মিয়াজীকে ঘিরে তৈরি নাটক থেকে। গত ২২ অক্টোবর তাঁর পরিবার দাবি করে, ইসকন-এর সদস্যরা তাঁকে অপহরণ করে নির্যাতন করেছে। ছেলের বক্তব্য অনুযায়ী, তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে চোখ বেঁধে ভয়ঙ্কর নির্যাতন করা হয় এবং পরে ঠাকুরগাঁওয়ে হত্যা করার চেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু তদন্তে গাজীপুর পুলিশ জানতে পারে, ঘটনাটি পুরোপুরি সাজানো। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, খতিব নিজেই বাসে চড়ে ঠাকুরগাঁও গেছেন, নিজে হাতে নিজের পায়ে শিকল বেঁধেছেন এবং পরে নাটকীয়ভাবে ‘অপহরণের’ গল্প তৈরি করেছেন। পুলিশের সাংবাদিক বৈঠকে বিষয়টি পরিষ্কার করা হলে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে প্রবল বিতর্ক।

কিন্তু এর মধ্যেই মুহিবুল্লার ছেলে ফেসবুকে ‘একশো ইসকন হত্যার’ ঘোষণা দেয়, যা মুহূর্তেই কট্টর গোষ্ঠীগুলোর হাতে অস্ত্র হয়ে ওঠে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় শুরু হয় ইসকন-বিরোধী বিক্ষোভ ও প্রচার। মৌলবাদী নেতারা সভা–সমাবেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণাবার্তা ছড়াতে থাকে। এমনকি একটি সভায় প্রকাশ্যে এক ব্যক্তি বন্দুক উঁচিয়ে “হিন্দুদের শিক্ষা দিতে হবে” বলে হুমকি দেয়। পরে পুলিশ দাবি করে, বন্দুকটি নাকি খেলনা ছিল, তবে ভিডিও দেখে অনেকেই বলছেন সেটি আসল আগ্নেয়াস্ত্রই ছিল।

সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিকটি হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া #tmd হ্যাশট্যাগ— যার অর্থ “Total Maloun’s Death”, অর্থাৎ “বিধর্মীদের সম্পূর্ণ মৃত্যু”। মাত্র এক সপ্তাহে এই হ্যাশট্যাগে তিন লক্ষাধিক পোস্ট করা হয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই ভুয়া প্রোফাইল থেকে। এসব পোস্টে সংখ্যালঘুদের হত্যা, মন্দির পোড়ানো ও মহিলাদের উপর আক্রমণের আহ্বান জানানো হয়েছে। গোয়েন্দাদের মতে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন প্রচার নয়, বরং একটি সংগঠিত সাইবার ক্যাম্পেইন, যার লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উসকে দিয়ে বাংলাদেশে জেহাদি উন্মাদনা ছড়িয়ে দেওয়া।

গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই প্রচারণার পেছনে রয়েছে হিযবুত তাহরীর ও আহলে হাদিসের একাংশের মতো কট্টর সংগঠন। তারা গণতন্ত্রের কাঠামো ভেঙে বাংলাদেশে খিলাফত কায়েম করতে চায়। শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর অরাজকতার সুযোগ নিয়ে “তালিবানি বাংলাদেশ” গড়ার পরিকল্পনা তাদের। এদের অনেকেরই পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে, আর ইউনূস সরকারের সময়কার রাজনৈতিক পরিবর্তন ও জঙ্গি নেতাদের মুক্তি পেয়ে যাওয়া তাদেরকে আরও সাহসী করে তুলেছে।

গোয়েন্দারা আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কট্টর সংগঠনগুলির সঙ্গে এখন বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির যোগাযোগ অনেক ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এমনকি বিতর্কিত ধর্মপ্রচারক জাকির নায়েকেরও বাংলাদেশে আগমন নিয়ে আলোচনা চলছে। আয়োজকেরা বলছেন, আগামী মাসেই তিনি ঢাকায় আসবেন ধর্মীয় জলসায় অংশ নিতে। যদিও সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সরকারিভাবে কিছু জানা যায়নি। তবে গোয়েন্দারা আশঙ্কা করছেন, জাকির নায়েকের বক্তৃতাই একসময় হোলি আর্টিজান হামলার জঙ্গিদের উদ্বুদ্ধ করেছিল— সেই প্রভাব এখন আবারও কাজে লাগাতে পারে কট্টর গোষ্ঠী।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এমন সংগঠিত ঘৃণার প্রচার অভূতপূর্ব। ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, সরকারের নীরবতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়েই জঙ্গিরা আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে যে কোনো সময় বাংলাদেশে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বা গণহত্যা ঘটতে পারে— এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করছে ভারতের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

তথ্যসূত্র: এইসময় অনলাইন।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন