
কুয়েতের ফাইলাকা দ্বীপে ৪,০০০ বছরের পুরনো দিলমুন সভ্যতার মন্দিরের সন্ধান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কুয়েতের ফাইলাকা দ্বীপে এক যুগান্তকারী প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার করেছে কুয়েতি ও ডেনিশ গবেষকদের একটি যৌথ দল। কুয়েতের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর কালচার, আর্টস অ্যান্ড লেটারস (NCCAL) জানিয়েছে, দ্বীপটিতে খনন কাজের সময় আবিষ্কৃত হয়েছে প্রায় ৪,০০০ বছর পুরনো ব্রোঞ্জ যুগের একটি প্রাচীন মন্দির, যা প্রাচীন দিলমুন সভ্যতার সময়কার।
এই গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারটি করেছেন কুয়েতি-ডেনিশ প্রত্নতাত্ত্বিক দল, যেটি ডেনমার্কের Moesgaard Museum-এর সহযোগিতায় কাজ করছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, ফাইলাকা দ্বীপের এই স্থানটি থেকে তারা একটির ওপর আরেকটি নির্মিত দুটি মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন—দুটিই দিলমুন সভ্যতার সময়কার নিদর্শন বহন করছে।
NCCAL-এর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক সুলতান আল-দুইসান জানিয়েছেন, এই আবিষ্কার কুয়েতের প্রাচীন ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করবে। তাঁর ভাষায়,
> “দিলমুন সভ্যতার সঙ্গে কুয়েতের সংযোগ ছিল গভীর। ফাইলাকা দ্বীপের এই মন্দিরগুলো প্রমাণ করে যে, কুয়েত অঞ্চলটি তখন ধর্মীয় ও বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল।”
খননস্থল থেকে পাওয়া গেছে বহু মৃৎপাত্র, ধর্মীয় নিদর্শন ও প্রাচীন স্থাপত্যের অংশ, যা দিলমুন যুগের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের চিহ্ন বহন করছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, এই মন্দিরগুলোতে সূর্য দেবতা বা প্রাকৃতিক শক্তির পূজা হতো, যা তৎকালীন উপসাগরীয় অঞ্চলের ধর্মীয় সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
উল্লেখ্য, দিলমুন সভ্যতা ছিল উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও সমৃদ্ধ সভ্যতা, যা বর্তমান কুয়েত, বাহরাইন ও পূর্ব সৌদি আরবজুড়ে বিস্তৃত ছিল। ইতিহাসবিদরা একে “মেসোপটেমিয়া ও সিন্ধু সভ্যতার সেতুবন্ধন” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, আবিষ্কৃত মন্দিরগুলোর আরও বিস্তারিত বিশ্লেষণ চলছে। পরবর্তী ধাপে নিদর্শনগুলোর সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কুয়েতের সংস্কৃতি কাউন্সিল।
এই আবিষ্কার শুধু কুয়েত নয়, গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলের ইতিহাস পুনরায় লেখার পথ খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।