
ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, হিন্দুরাও এখন দাঁড়িপাল্লার পক্ষে: গোলাম পরওয়ার
নিজস্ব প্রতিবেদক | HindusNews :
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, হিন্দুরাও এখন দাঁড়িপাল্লার পক্ষে এক হয়েছে।’
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে খুলনার ডুমুরিয়ার স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জামায়াতে ইসলামীর ডুমুরিয়া উপজেলা সনাতন শাখার উদ্যোগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্মানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতার পর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করেছে কেবল নিজেদের স্বার্থে। এবার সময় এসেছে হিন্দুদের প্রকৃত উন্নয়ন ও মর্যাদার—যা সম্ভব ইসলামী সরকারের অধীনে। তিনি বলেন, “দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। এখন একমাত্র দল বাকি আছে—জামায়াতের দাঁড়িপাল্লা।”
তিনি দাবি করেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইতোমধ্যে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। “ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চব্বিশের পরিবর্তনের মাধ্যমে নতুন বার্তা দিয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও সেই বার্তা দেশবাসী দেখবে, ইনশাআল্লাহ,” বলেন তিনি।
জামায়াতের এ নেতা আরও বলেন, “নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে এবং নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও নভেম্বরে গণভোটের মাধ্যমেই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তবেই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হবে।”
ডুমুরিয়ার অতীত প্রসঙ্গে গোলাম পরওয়ার বলেন, একসময় এ এলাকা ছিল সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য। তিনি সংসদ সদস্য থাকার সময় ডুমুরিয়াকে সন্ত্রাসমুক্ত করেছিলেন বলে দাবি করেন। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে ডুমুরিয়াকে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারও করেন তিনি।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা হিন্দু কমিটির সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মণ্ডল। বক্তব্য দেন প্রমত গাইন, ডা. হরিদাস মণ্ডল, অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, অ্যাডভোকেট আপোষ সিংহ, কানাই লাল কর্মকারসহ স্থানীয় হিন্দু সংগঠনের নেতারা।
দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ঢোল, তবলা, কাঁসা ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র নিয়ে হাজারো সনাতন ধর্মাবলম্বী অংশ নেন। নারী-পুরুষের উপচে পড়া উপস্থিতিতে স্বাধীনতা চত্বর রূপ নেয় আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভরা মিলনমেলায়।
সম্মেলন শেষে স্বাধীনতা চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়, যাতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন।