
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে মন্দিরে পদদলিত হয়ে ১২ জনের মৃত্যু! আহত অনেক
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মন্দিরে পদদলিত হয়ে অন্তত ১২ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু বলে জানা গেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে শ্রীকাকুলাম জেলার কাসিবুগগা ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র দিন একাদশী উপলক্ষে হাজার হাজার ভক্ত উপবাস ও পূজা অর্পণের জন্য মন্দিরে সমবেত হয়েছিলেন। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে হঠাৎ বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে পদদলনের ঘটনাটি ঘটে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্দির থেকে প্রকাশিত ভয়াবহ ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে—শত শত নারী পূজার ঝুড়ি হাতে সিঁড়িতে একে অপরের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করছেন। অনেকেই শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পদদলিত হওয়ার পর মন্দিরের চত্বরে অসংখ্য দেহ ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা ও পুলিশ দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে আহতদের হাসপাতালে পাঠায়।
সরকারি সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় মন্দির প্রাঙ্গণে নির্মাণ কাজ চলছিল, যা ভিড় নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। স্থানীয় প্রশাসনকে আগে থেকে এত বিশাল জনসমাগমের সম্ভাবনার কথা মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়নি, যা নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির অন্যতম কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ঘটনাটিকে “হৃদয়বিদারক” বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত ও যথাযথ চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী পবন কল্যাণ বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে। কার্তিক মাসে বড় মন্দিরগুলোতে ভিড়ের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সারিবদ্ধ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।”
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স (সাবেক টুইটার)-এ শোকবার্তা দিয়ে বলেছেন,
> “অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলামের ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে পদদলিত হওয়ার ঘটনায় আমি গভীরভাবে ব্যথিত। যারা তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান ঘোষণা করেছেন।
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের কাছে একাদশী দিনটি অত্যন্ত পবিত্র। এদিন ভক্তরা উপবাস থেকে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করেন এবং পূজা অর্পণ করে পরম শান্তি ও মুক্তির প্রার্থনা জানান। কিন্তু আজকের এই তীর্থযাত্রা পরিণত হলো এক অনাকাঙ্ক্ষিত শোকের ঘটনায়।