
লালমনিরহাটে গৃহশিক্ষকের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় হিন্দু ছাত্রী শমরিয়া রানীকে অপহরণের অভিযোগ!
নিজস্ব প্রতিবেদক :
লালমনিরহাটে এক হিন্দু ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক মুসলিম গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই গৃহশিক্ষক ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক মেয়েটিকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। ঘটনার সাত দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর গ্রামে। ভুক্তভোগী ছাত্রী শমরিয়া রানী বর্মন (১৭) রতিপুর গ্রামের স্বপন কুমার বর্মনের মেয়ে। বর্তমানে সে সরকারি মজিদা কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
অভিযোগে জানা যায়, অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক মো. রব্বানী (২৬) এবং তার সহযোগী মো. আপেল (২৪) — উভয়ের পিতা মো. রোস্তম আলী, একই এলাকার বাসিন্দা।
স্বপন কুমার বর্মন জানান, “রব্বানী প্রায় ৬-৭ বছর আগে আমার মেয়েকে গৃহশিক্ষক হিসেবে পড়াতো। পরবর্তীতে সে আমার মেয়েকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে থাকে। ধর্মভিন্নতার কারণে মেয়ে তাকে বারবার বাধা দেয় এবং বিষয়টি আমাদের জানায়। আমরা বিষয়টি জানার পর রব্বানীকে সতর্ক করি। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং হুমকি দেয়— ‘যেভাবেই হোক শমরিয়াকে আমি নিয়ে যাবো।’”
অভিযোগ অনুযায়ী, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, রাত ৮টার দিকে শমরিয়া রানী তার ঠাকুরদা শ্রী শুধাংশু বর্মনের বাড়ি থেকে নিজ বাড়ির পথে ফিরছিল। পথে সুদীরের ভিটার কাছাকাছি পৌঁছালে, অভিযুক্ত রব্বানী, আপেল ও আরও ৩-৪ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি একটি মাইক্রোবাসে এসে তার পথরোধ করে। এরপর জোরপূর্বক তাকে টেনে-হিঁচড়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে মোস্তাফির দিকে পালিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুজন চন্দ্র রায় (৩৬) ও বলরাম রায় (৬০) অপহরণের দৃশ্য দেখে মেয়েটিকে রক্ষার চেষ্টা করলেও, অভিযুক্তরা দ্রুত মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যায়।
অপহরণের পর থেকে মেয়েটিকে উদ্ধারে পরিবারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হলেও কোনো সাফল্য মেলেনি। নিরুপায় হয়ে স্বপন কুমার বর্মন থানায় জিডি (সাধারণ ডায়েরি) করেন। তবে অভিযোগের পরও এখনো পর্যন্ত পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারেনি বা অভিযুক্তদের কাউকেও গ্রেফতার করা হয়নি।
অভিযোগকারী স্বপন কুমার বর্মন HindusNews-কে বলেন,
“আমার মেয়েকে ধর্মভিন্নতার কারণে প্রতিহিংসা থেকে অপহরণ করা হয়েছে। আমরা থানায় জিডি করেছি, কিন্তু সাত দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ দেখছি না। মেয়েটি কোথায় আছে আমরা জানি না— এটা এক অসহ্য যন্ত্রণা।”
স্থানীয়রা জানায়, এই ঘটনায় এলাকায় চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, শমরিয়া রানী হয়তো জোরপূর্বক ধর্মান্তরের শিকার হতে পারেন।
এদিকে, সংখ্যালঘু সংগঠনগুলো দ্রুত মেয়েটিকে উদ্ধারের দাবি জানিয়েছে এবং অপহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছে।