বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে ঘৃণার উন্মাদনা: ফেসবুকে ছড়াচ্ছে ‘#TMD’ নামে ভয়াবহ প্রচারণা

4 days ago
VIEWS: 498

নিজস্ব প্রতিবেদক, HindusNews Desk :

বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবারও হিন্দু বিদ্বেষী ঘৃণার উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে নতুন এক ভয়াবহ হ্যাশট্যাগ— #TMD, যার পূর্ণরূপ বলা হচ্ছে “Total Maloun Death”। এই বিকৃত ও হত্যার আহ্বানমুখী ট্যাগটি ব্যবহার করে অসংখ্য অ্যাকাউন্ট থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অশ্লীল, বিদ্বেষপূর্ণ ও সহিংসতাপ্রবণ পোস্ট দেওয়া হচ্ছে।

ঘৃণার এই ঢেউ শুরু হয় ঢাকার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া কিছু তরুণের প্রোফাইল থেকে। কেউ কেউ তাদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ্যে প্রচার করছে, আবার কেউ রাজনৈতিক দলের অনুসারী হিসেবে সক্রিয়। প্রথমে কিছু ছোট গ্রুপে সীমাবদ্ধ থাকলেও, কয়েক দিনের মধ্যে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে শত শত ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে। বিশেষত অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে একাধিক ভুয়া প্রোফাইল থেকে “হিন্দুদের শাস্তি দাও”, “TMD ইজ কামিং”, “একটা ধর্ম, এক নেতা”— এমন স্লোগানভিত্তিক পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে।

ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কিছু পোস্ট সরিয়ে ফেললেও, এখনও বহু অ্যাকাউন্ট খোলা রয়েছে যেগুলো থেকে হিন্দুবিদ্বেষী পোস্ট, মন্দিরের ছবি বিকৃত করা এবং পূজা-পার্বণ নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে। ঢাকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, “এইসব পোস্ট নিছক অনলাইন ঘৃণা নয়, বাস্তবে এগুলো সহিংসতার আগুনে ঘি ঢালছে। ২০২১ সালে যেমন কুমিল্লা ঘটনার পর মন্দিরে হামলা হয়েছিল, ঠিক তেমনি আবারও এমন কিছু ঘটতে পারে।”

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা রহমান মন্তব্য করেন, “#TMD হ্যাশট্যাগটি নিছক সাইবার ট্রেন্ড নয়; এটি মূলত গণহত্যামূলক মানসিকতার প্রতিফলন। রাষ্ট্র যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তবে ভবিষ্যতে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।” দেশের সংখ্যালঘু সংগঠনগুলোর অভিযোগ, এই প্রচারণা উদ্দেশ্যমূলকভাবে সংগঠিত, যা শুধু ধর্মীয় বিদ্বেষ নয়— বরং এটি এক ধরনের সাইবার জেনোসাইড প্রোপাগান্ডা, যার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং সন্দেহজনক কয়েকটি অ্যাকাউন্ট শনাক্তের কাজ চলছে। তবে এখন পর্যন্ত সরকার বা কোনো সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।

২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে অনলাইন ঘৃণা-উসকানি দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিকবার সহিংসতা সংগঠিত হয়েছে। ২০২১ সালের কুমিল্লার ঘটনায় দেখা গেছে, একটি ভুয়া ফেসবুক পোস্ট থেকেই সারাদেশে মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই ধরণের উস্কানিমূলক প্রবণতা সমাজে ধর্মীয় বিভাজন গভীর করছে এবং সংখ্যালঘুদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন