
চিন্ময় প্রভুর মুক্তি না দিলে বিএনপি-জামায়াতকে ভোট নয়: ঝুমন দাস
HindusNews ডেস্ক :
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি বা জামায়াত ইসলামিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের তরুণ অধিকারকামী নেতা ঝুমন দাস। নিজের একটি ফেসবুক পোস্টে তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে এই আহ্বান জানান। ঝুমন দাস স্পষ্টভাবে লিখেছেন, চিন্ময় প্রভুর মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত হিন্দু সমাজ যেন এই দুই দলকে সম্পূর্ণভাবে বর্জন করে।
তার ভাষায়, “চিন্ময় প্রভুর অন্যায় কারাবাস হিন্দু সমাজের প্রতি অপমান। বিএনপি-জামায়াত-শিবির হিন্দুদের ভোটের অধিকার রাখে না। এরা নেচে নেচে নির্বাচন করবে, আর আমাদের অধিকার চাওয়া মানুষটাকে জেলে ভরে রাখছে।”
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও অভিযোগ করেন, জামায়াত চাইলে চিন্ময় প্রভুর জামিন দিতে পারত, কিন্তু তারা তা করছে না। “তাহলে আমরা কেন ভোট দেব?”—প্রশ্ন তোলেন ঝুমন দাস। তিনি হিন্দু ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যদি কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকে, তাকে ভোট দিন। আর কেউ না থাকলে ব্যালটে ‘ভোট ফর চিন্ময়’ লিখে দিন। এটাই হবে আমাদের প্রতিবাদ, আমাদের ঐক্যের প্রকাশ।”
পোস্টে ঝুমন দাস কড়া হুঁশিয়ারি দেন সেই হিন্দু পাতিনেতাদের, যারা বিএনপি বা জামায়াতের হয়ে ভোট চাইতে হিন্দু সমাজে যাবেন। তার ভাষায়, “যারা বিএনপির হয়ে হিন্দুদের কাছে ভোট চাইতে আসবে, তাদের এমন শিক্ষা দিতে হবে যেন ভবিষ্যতে কেউ হিন্দু সমাজকে ব্যবহার করার সাহস না পায়।” তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে আরও লেখেন, “যারা নিজেদের স্বার্থে আমাদের অধিকার বিক্রি করে দেয়, তাদের সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করা উচিত—যাতে তারা বুঝতে পারে হিন্দু সমাজ আর নীরব থাকবে না।”
ঝুমন দাস মনে করেন, হিন্দু ভোটাররা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নেয়, তাহলে তাদের রাজনৈতিক প্রভাব অস্বীকার করার উপায় থাকবে না। “আমরা দুই কোটি হিন্দু, আমাদের ভোটেই অন্তত চল্লিশজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। যদি আমরা একসাথে দাঁড়াই, আমাদের শক্তি কেউ অগ্রাহ্য করতে পারবে না,” বলেন তিনি।
তিনি আরও লেখেন, “তারা নিজেরা মারামারি করুক, সেটা আমাদের বিষয় না। আমাদের একটাই দাবি—আমাদের মানুষ চিন্ময়ের মুক্তি।” পাশাপাশি তিনি হিন্দু সমাজকে “না ভোট” আন্দোলনের দিকেও উৎসাহিত করেন। তার মতে, যদি ব্যালট বাক্সে শুধু “চিন্ময় প্রভুর মুক্তি চাই” লেখা একটি কাগজও ফেলা হয়, সেটিও হবে প্রতিরোধের শক্তিশালী বার্তা।
চিন্ময় প্রভু দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তা রক্ষায় সোচ্চার ছিলেন। তার গ্রেপ্তার ও কারাবাসকে অন্যায় এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন অনেকে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যেই হিন্দু সমাজ তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে।
ঝুমন দাসের এই ফেসবুক পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, “এটাই সময় ঐক্যের।” কেউ কেউ লিখেছেন, “চিন্ময় প্রভুর মুক্তি না হলে হিন্দু ভোটে তালা পড়ে থাকবে।”