
কুয়াকাটায় রাস উৎসবের জমকালো সমারোহ; পুণ্যার্থীদের ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক :
শীতের আগমনে এবং পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সুবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থী ভক্তদের ভিড় উপচে পড়েছে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায়। জাগতিক পাপ মোচনের আশায় লাখো হিন্দু ধর্মাবলম্বী রাস উৎসবের পূর্ণিমা তিথিতে পুণ্যস্নান ও ধর্মীয় আনুষ্ঠান্যে অংশ নিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঊষালগ্নে শুরু হওয়া রাস স্নান সকাল ৯টায় শেষ হয়। উৎসবকে ঘিরে দু’দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুণ্যার্থী-কুলকুল কুয়াকাটায় আসতে শুরু করে। উৎসবের প্রারম্ভ ঘটে রবিবার সন্ধ্যায় অধিবাসের মাধ্যমে। মধ্যরাত থেকে পুন্যার্থীরা সমুদ্র সৈকতে নাম সংকীর্তন, পূজার্চনা এবং পদাবলী কীর্তনের মাধ্যমে নিজেদের আধ্যাত্মিকতা উদযাপন করেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সমুদ্র স্নানের মাধ্যমে জাগতিক পাপ মোচন হয় এবং মনের বাসনা পূর্ণ হয়। তাই প্রতি বছর এই উৎসবে অংশ নিয়ে ভক্তরা সমুদ্র স্নান করে ধর্মীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। সারারাত ধরে চলতে থাকে পূজা-আর্চনা, কীর্তন ও ভগবতপাঠ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে উৎসবে আগত পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার ভিডিপি, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সমন্বয়ে কুয়াকাটাকে নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করা হয়। বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা ও চেকপোস্টের মাধ্যমে পুণ্যার্থীদের নজর রাখা হয়। এছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিমও রাখা হয়েছে।
কুয়াকাটা রাসপুজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন মন্ডল জানিয়েছেন, “উষালগ্নে সাগর সৈকতে পাপ মোচন ও পুন্য অর্জনের উদ্দেশ্যে স্নানে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের ঢল নেমেছে। অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন মানত পূরণ করেছেন পুরোহীতদের মাধ্যমে। তবে শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই নয়, নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষও মিলিত হয়েছেন এই ধর্মীয় উৎসবে।”
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে এ বছর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও ভক্তরা কুয়াকাটায় পৌঁছেছেন। স্থানীয় পর্যটন নগরী এই সময়ে একেবারেই প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, যেখানে ধর্মীয় উৎসব ও পর্যটনের মিলন ঘটে।
কুয়াকাটার এই রাস উৎসব শুধু আধ্যাত্মিক আনন্দই প্রদান করে না, বরং সামাজিক ঐক্য ও ভক্তি-ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটায়।