
ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে শেকৃবি শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায় বহিষ্কার!
HindusNews ডেস্ক:
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান এক সেমিস্টারের কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।
ধনীশ্রী রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মাস্টার্স দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। তিনি গাইবান্ধা সদরের মদনপুর গ্রামের স্বপন কুমার রায় ও পার্বতী রায়ের মেয়ে।
বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিম্যাল সাইন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ২য় সেমিস্টারে (জুলাই-ডিসেম্বর/২৪) অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায় গত ২৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্য করায় তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ধনীশ্রী রায়কে আবাসিক হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো এবং চলমান (জুলাই-ডিসেম্বর/২৪) সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকেও বহিষ্কার করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বুয়েট শিক্ষার্থী শ্রীশান্তের ধর্মীয় উস্কানি ও ধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর ধনীশ্রী রায় তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন— “যে ধর্মে কালী, দুর্গা আছে— সেই ধর্মের ছেলে এমনটা করতে পারে না। তাকে হিন্দু বলে এখানে ধর্ম টেনে লাভ নাই। ছেলেটা মানসিকভাবে অসুস্থ, চিন্তাভাবনা বিকৃত। মানুষের কাজের বিচার ধর্ম দিয়ে নয়, মানসিকতা দিয়ে হওয়া উচিত। কথায় কথায় উগ্রদের মত মিছিল, বয়কট, কমিউনাল অ্যাটাক, সনাতন পরিপন্থী মনোভাব কিসের পরিচয় সেটা বরং লক্ষণীয়।”
এর পাশাপাশি তিনি এক কমেন্টে ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকারীদের ‘বাস্টার্ড জেনারেশন’ বলে আখ্যা দেন। ওই মন্তব্য ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। অনেকে ধনীশ্রীর মন্তব্যকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক ও আপত্তিকর বলে অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাটি তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে।
তদন্ত শেষে কমিটি ধনীশ্রী রায়ের ফেসবুক পোস্ট ও মন্তব্যকে ধর্মীয় উস্কানিমূলক, কুরুচিপূর্ণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী হিসেবে মত দেয়। এরপর শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।