
যশোরে স্বর্ণের দোকানে সশস্ত্র ডাকাতি: ঠেকাতে গিয়ে ৭ নারী-পুরুষ বেঁধে ফেলা, আহত ১
মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি, HindusNews
যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী মশিয়াহাটি বাজারে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) ভোর রাত চারটার দিকে অস্ত্রধারী ডাকাতদল স্থানীয় একটি স্বর্ণের দোকানে হামলা চালিয়ে অন্তত চার লাখ টাকার স্বর্ণ ও রূপার অলংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতি ঠেকাতে এগিয়ে আসা সাত নারী-পুরুষকে তারা হাত-পা বেঁধে ফেলে। এক নারীকে মারধর করে গলার স্বর্ণের চেইনও ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মশিয়াহাটি বাজারের ‘গৌতম জুয়েলার্স’-এর মালিক গৌতম কর্মকার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যান। গভীর রাতে পাশের সেলুন মালিক জয় রায় ফোন করে দোকানে ডাকাতের হামলার খবর দিলে গৌতম আতঙ্কে বাইরে বের হতে পারেননি। এ সময় আশপাশের কয়েকজন লোক এগিয়ে গেলে ডাকাতরা তাদের বেঁধে ফেলে।
বাঁধা দেওয়া স্থানীয়রা হলেন—মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের বিকাশ বিশ্বাস ও তার স্ত্রী প্রতিমা বিশ্বাস, অমর বিশ্বাস ও তার স্ত্রী বৈশাখী বিশ্বাস, তৌশিক দাস, অণিমেষ বিশ্বাস ও পরিমল বিশ্বাস। ডাকাতরা প্রতিমা বিশ্বাসকে মারধর করে গলার স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয় এবং দোকানের সিন্ধুক ভেঙে প্রায় ৪ লাখ টাকার স্বর্ণ ও রূপার অলংকার লুট করে পালিয়ে যায়।
ডাকাতদল চলে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা দেওয়া সাতজনকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে অভয়নগর থানার ওসি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মশিয়াহাটি বাজার কমিটির সভাপতি মিহির মণ্ডল বলেন, “ঘটনার পর পুরো বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা নিরাপত্তা জোরদারে জরুরি সভা ডেকেছি।”
যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু ব্যবসায়ীদের আমরা সান্ত্বনা দিয়েছি এবং প্রশাসনের কাছে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছি।”
যশোর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাসার জানান, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।”
ডাকাতির এই ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু ব্যবসায়ী মহলে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, সম্প্রতি এলাকায় একের পর এক দোকান ও মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটছে, কিন্তু এর কোনো বিচার হচ্ছে না। ফলে চোর-ডাকাতদের সাহস আরও বেড়ে যাচ্ছে।